নিজস্ব সংবাদদাতা : উলুবেড়িয়া কালীনগরের ফিরোজ মল্লিকের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ শিক্ষার অনুকূল নয়। বাবা জরির কাজ করে কোনোরকমে সংসার চালান। লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন জরির কাজও বন্ধ। ফিরোজ এবার মাধ্যমিকে কালীনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে। আবার আমতার দীপ মন্ডল রোজ ভোরে ঘুম থেকে উঠেই বাড়িতে বাড়িতে দুধ বিক্রি করে কৃতিত্বের সাথে নিজের পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, উদয়নারায়ণপুরের বৃষ্টি মাঝির চোখজুড়ে আগামীর স্বপ্না বর্মন হয়ে ওঠার একরাশ স্বপ্ন। পড়াশোনার সাথে সাথেই বৃষ্টি ইতিমধ্যেই খেলাধুলাতে নিজের কৃতিত্বের নিদর্শন রেখেছে। রাজ্যস্তরের স্কুল ক্রীড়ায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে নিজের প্রতিভার নিদর্শন রেখেছে এই খুদে অ্যাথলিট।
কিন্তু, বৃষ্টির ঘর জুড়ে অভাব আর অভাব। বৃষ্টি, ফিরোজ, দীপদের মতো বহু প্রতিভা লুকিয়ে থাকে সমাজের বুকে। গ্রামীণ হাওড়ার সেরকমই দশজন লড়াকু মেধাবীর অদম্য লড়াইকে সম্মান জানাল আমতার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’। গত শনি ও রবিবার সংস্থার গুটিকয়েক সদস্য এই সমস্ত কৃতিদের দ্বারে পৌঁছে তাদের ‘পাঠবৃত্তি’ ও স্মারক তুলে দেন। পাশাপাশি দেওয়া হয়, নগদ দু’হাজার টাকা, গাছ, ন্যাপকিন, মাস্ক, স্যানিটাইজার, শিক্ষাসামগ্রী সহ নানা উপহার। অ্যাথলিট বৃষ্টির হাতে ক্রীড়াসামগ্রী তুলে দেন সংগঠনের সদস্যরা।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির সম্পাদক তাপস পাল জানান, “উত্তরণ আমাদের বার্ষিক অনুষ্ঠান। প্রতিবছর ‘উত্তরণ’-এর মঞ্চে আমরা গ্রামীণ হাওড়ার দশ’জন লড়াকু মেধাবীর জীবনের কাহিনী তুলে ধরি। তাদের লড়াইকে সম্মান জানাই। এবার করোনার জেরে উত্তরণের অনুষ্ঠান বাতিল করা হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা নির্বাচিত দশজন লড়াকু কৃতির বাড়িতে গিয়ে তাদের সংবর্ধনা জানিয়ে তাদের হাতে বৃত্তি তুলে দিয়েছি।” এহেন সম্মান পেয়ে আপ্লুত পড়ুয়ারাও। উদয়নারায়ণপুরের অক্ষয় মন্ডলের কথায়, “এই সম্মান আমার মতো শিক্ষার্থীদের এগিয়ে চলার জেদকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে।”