জীবিত ভাইপোকে মৃত দেখিয়ে জীবন বীমার কয়েক লক্ষ টাকা ‌আত্মসাৎ করার অভিযোগে গ্রেফতার কাকা

By নিজস্ব সংবাদদাতা

Published on:

নিজস্ব সংবাদদাতা : জীবিত ভাইপোকে মৃত দেখিয়ে তার নকল ডেথ সার্টিফিকেট জমা দিয়ে জীবন বীমার কয়েক লক্ষ টাকা ‌আত্মসাৎ করার অভিযোগে শনিবার জীবন বীমা উলুবেড়িয়া শাখা অফিসের সামনে থেকে অনুপ দাস নামে(৫০) এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করলো উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ। ধৃত অনুপ দাস আমতা থানা এলাকার উদং এর বাসিন্দা। রবিবার ধৃতকে উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক তার পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। জানা গেছে ধৃত অনুপ দাস বছর চারেক আগে দুটি জীবন বীমা পলিসি করান তার ভাইপো‌ সৈকত দাসের নামে। পলিসির নমিনি হিসাবে নিজের স্ত্রী শ্যামলী দাসের নাম লিখে দেয় অনুপ দাস। জীবন বীমার উলুবেড়িয়া শাখা সুত্রে জানা গেছে চার বছর পলিসি চালানোর পর সৈকত দাসের ভুয়ো ডেথ সার্টিফিকেট দেখিয়ে ৪৮৭৬২৮৩০৬ নং পলিসি বাবদ তিন লক্ষ চার হাজার নয়শো কুড়ি টাকা এবং ৪৯৬৯৫১৫৪৩ নং পলিসি বাবদ ছয় লক্ষ পঞ্চাশ হাজার নয়শো এগারো টাকা তুলে নেয় অভিযুক্ত অনুপ দাস। কয়েক মাসের ব্যবধানে প্রায় পুরো টাকাটাই তুলে নিলে, জীবন বীমার আধিকারিকরা শ্যামলী দাসকে তার ভবিষ্যৎ সুরক্ষার জন্য কিছু টাকা বিনিয়োগ করতে বললেও, শ্যামলী দাস কোনো ভাবেই বিনিয়োগ করতে রাজি হননি। শ্যামলী দাসের অভিব্যক্তিতে সন্দেহ হ‌ওয়ায় পলিসি এজেন্টকে সৈকতের বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে বলেন অফিসের আধিকারিকরা। তখনই জানা যায় দিব্যি বেঁচে আছে সৈকত। আধিকারিকদের নির্দেশ মতো জীবন বীমার অফিসে এসে নিজের জীবিত থাকার প্রমাণ পত্র জমা দেয় সৈকত। পুলিশকে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে পরিকল্পনা করে অনুপ দাসকে জীবন বীমার উলুবেড়িয়া শাখা অফিসে ডেকে পাঠান জীবন বীমার উলুবেড়িয়া অফিসের চিফ ম্যানেজার গোরাচাঁদ সাহু। এরপরেই উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। অনুপ দাসে এবং তার স্ত্রী শ্যামলী দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হলেও শ্যামলী দাস পলাতক। জীবন বীমার উলুবেড়িয়া শাখার এক আধিকারিক বলেন সাধারণত পলিসি করার তিন বছর পর কোনো উপভক্তার মৃত্যু হলে আমরা ডেথ সার্টিফিকেট ও পঞ্চায়েতের সার্টিফিকেট দেখে নমিনিকে টাকা দিয়ে দিই। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। কিন্তু কাগজপত্র জমা দেওয়ার সময় শ্যামলী দাসের হাবভাব দেখে সন্দেহ হয়। পরে তাকে ভবিষ্যতে সুরক্ষার জন্য নতুন ভাবে বিনিয়োগ করার কথা বললে, তিনি যেভাবে এই প্রস্তাব নাকচ করেন, তার থেকেই আমাদের সন্দেহ দৃঢ় হয়। পরে পলিসির এজেন্টকে দিয়ে খোঁজখবর নিতেই সমস্ত ঘটনা পরিষ্কার হয়। সুত্রের খবর শুধুমাত্র জীবন বীমার উলুবেড়িয়া শাখা নয়, অন্যান্য কয়েকটি শাখাতেও জালিয়াতি করছে অনুপ।