নিজস্ব সংবাদদাতা : বাংলাজুড়ে মা মেলাইচন্ডীর নাম। হাওড়া জেলা তো বটেই, বছরভর রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ ছুটে আসেন আমতার মা মেলাইচন্ডীর মন্দিরে। মানুষের বিশ্বাস, ভক্তের ডাকে সাড়া দেন মা। মা’য়ের অসীম কৃপায় নানা দুরূহ সমস্যা, কঠিন রোগ থেকে মুক্তি মেলে ভক্তদের। ৫১ সতীপীঠের অন্যতম আমতার মা মেলাইচন্ডী। কথিত রয়েছে, সতীর মালাইচাকি থেকেই মা মেলাইচন্ডীর সৃষ্টি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ কয়েক শতাব্দী আগে আমতায় মা’য়ের মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। কথিত আছে, সতী দেহ রাখার পর আসামের জয়ন্তী খাসিয়া পাহাড় থেকে নদীপথে সতীর দেহাংশ আসে দামোদর তীরবর্তী আমতায়। সেইসময় দেবীর স্বপ্নাদেশ পান সাধক জটাধারী চক্রবর্তী। মা’য়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে দামোদর নদী পেরিয়ে নদীর পশ্চিম পাড়ে একটি পাথরের খন্ড দেখতে পান জটাধারী চক্রবর্তী। জানা যায়, তিনি প্রতিদিন নদী পেরিয়ে পাথরের মূর্তিটি পুজো করতে যেতেন। কথিত রয়েছে, প্রতিদিন জটাধারী চক্রবর্তী কুমিরের পিঠে চড়ে নদী পেরোতেন। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
তারপর আবার মা’য়ের স্বপ্নাদেশে পেয়ে মা’কে নিজের এলাকায় নিয়ে আসেন। সেখানেই বর্তমান মন্দির গড়ে উঠেছে। জানা যায়, দামোদর নদীপথে কোলকাতার এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী লবণের ব্যবসা করতে যেতেন। আমতা সংলগ্ন এলাকায় তার লবণ বোঝাই জাহাজ ডুবে যায়। তারপর মা’য়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনিই আমতার বুকে মা মেলাইচণ্ডীর মন্দির নির্মাণ করেন। সারা বছর মা’য়ের নিত্যসেবা অনুষ্ঠিত হয়। পাশাপাশি, সাড়ম্বরে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়। দুর্গাপুজো, কালীপুজোতেও মা’য়ের বিশেষ পুজো অনুষ্ঠিত হয়। আমতা বাজার লাগোয়া মেলাইবাড়ি। সেখানেই মা মেলাইচন্ডী অধিষ্ঠান করছেন। মন্দিরের সুবিশাল প্রবেশদ্বারে রয়েছে সিং দুয়ার। মা মেলাইচন্ডীর মন্দিরের পাশাপাশি রয়েছে শিব মন্দির, শ্রী রামকৃষ্ণদেবের মন্দির। আমতার মেলাইবাড়িতে বছরভর অজস্র মানুষ আসেন। আমতা ও তার পাশ্ববর্তী বহু গ্রামের মানুষের কাছে দেবী কার্যত অভিভাবিকা। মা’য়ের পুজো দিয়ে শুভ কাজ শুরু করেন আমতার মানুষ। সামনেই দীপান্বিতা অমাবস্যা। আর তাই মেলাইবাড়ি জুড়ে এখন সাজো সাজো রব।