নিজস্ব সংবাদদাতা : সময়টা ১৯২৬। বাগনানের ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায়।আর হবেই না বা কেন! ১৯২৬ সালেই যে বাগনানের এক প্রত্যন্ত গ্রামে পা রেখেছিলেন আপামর বাঙালির পরমপূজ্য বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম। স্থানীয় ইতিহাস গবেষকদের কথায়, ১৯২৬ সালেই বাগনান থানার আগুন্সী গ্রামের এক স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বের বাড়িতে এসেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম।
জানা যায়, আগুন্সী গ্রামেই পৈতৃক বাড়ি ছিল প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দ্বারকানাথ মিত্রের। তৎকালীন সময়ে হাওড়ার অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী বিভূতিভূষণ ঘোষের আন্তরিক আহানে সাড়া দিয়ে দ্বারকানাথ বাবুর বাড়িতে অনুষ্ঠিত কংগ্রেসের জেলা সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন কবি। বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক প্রদীপ রঞ্জন রীতের কথায়, “বিদ্রোহী কবির আগুন্সী গ্রামে আগমনের খবর অনেক জায়গায় মিললেও সবিস্তারে সেভাবে জানা ছিলনা। দীর্ঘ গবেষণার দ্বারা বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছি।”
প্রদীপ বাবু জানান, “নজরুল ট্রেনে করে এসেছিলেন।পরণে ছিল গেরুয়া পাঞ্জাবি ও ধুতি। বাগনান থেকে তিনি দীর্ঘ পথ হেঁটে আগুন্সী গ্রামের মিত্র বাড়িতে পৌঁছেছিলেন।কবিকে শোভাযাত্রা করে আনা হয়েছিল। বিকেলের আসরে নিজের লেখা দু’টি গান গেয়েছিলেন। সে আসরে হারমোনিয়াম ছিল কিন্তু তবলা ছিলনা। ছিলনা মাইকও। স্থানীয় তরুণরা তাঁর গানে উদ্বেল হয়ে উঠেছিল।”
জানা যায়, কাজী নজরুল ইসলাম সেদিন যে’দুটি গেয়েছিলেন – “ওঠরে চাষী জগদ্বাসী ধর কষে লাঙল” এবং “জাতের নামে বজ্জাতি সব জাত জালিয়াৎ খেলছ জুয়া”। যদিও কালের অমোঘ নিয়মে ক্রমে হারিয়ে যেতে বসেছে সেইসব গৌরবময় স্মৃতি। বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে গেছে সেদিনের মিত্র বাড়ি। তবু বিদ্রোহী কবির জন্মদিনে সেই গৌরবময় স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরেই কবির চরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন প্রদীপ বাবুর মতো কিছু ইতিহাস সচেতন নাগরিক।