পৃথ্বীশরাজ কুন্তী : ক্রমশ বদলাতে শুরু করেছে সামাজিক অনুষ্ঠানের চরিত্র। রক্তদান, স্বাস্থ্যশিবির, চারাগাছ কিমবা শীতবস্ত্র প্রদানের মতো বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি স্থান করে নিচ্ছে বিয়ে, অন্নপ্রাশন, শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে। এই ভাবাধারাতে অনুপ্রাণিত হয়ে ছেলের অন্নপ্রাশনে রক্তদানের আয়োজন করলেন উলুবেড়িয়ার দম্পতি। বুধবার নিজেদের একমাত্র সন্তান অভ্রদীপের অন্নপ্রাশন উপলক্ষ্যে বাড়িতে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করেন উলুবেড়িয়ার সমরুকের বাসিন্দা অর্পণ ও সুপ্রীতি সামন্ত।
সামন্ত দম্পতির এহেন মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে পাঁচ মহিলা সহ মোট ৩৪ জন রক্তদান করেন। প্রত্যেক রক্তদাতার হাতে একটি করে চারাগাছ তুলে দেন অর্পণ ও সুপ্রীতি। কেন এই উদ্যোগ?— অভ্রদীপের বাবা অর্পণ সামন্তের কথায়, “করোনা পরিস্থিতিতে রক্তের সংকট সম্পর্কে আমরা সকলেই ওয়াকিবহাল। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমার শ্যালক শুভদীপ ছেলের অন্নপ্রাশনে রক্তদান শিবির করার পরামর্শ দেন। তার প্রস্তাবেই এই আয়োজন।”
রক্ত সংগ্রহের দায়িত্বে ছিল উলুবেড়িয়ার একটি ব্ল্যাডব্যাঙ্ক। নিজে রক্ত দিতে চেয়েছিলেন অর্পণ। কিন্তু শারীরিক সমস্যার জেরে তা সম্ভব হয়নি। প্রচলিত প্রথার বেড়াজাল টপকে উলুবেড়িয়ার প্রত্যন্ত গ্রামের দম্পতি যেভাবে সামাজিক অনুষ্ঠানে সচেতনতার বার্তা দিলেন তাকে একবাক্যে কুর্নিশ জানিয়েছেন গ্রামীণ হাওড়ায় রক্ত নিয়ে কাজ করা রেজাউল করিম, শুভদীপ সাউরা৷ তাঁদের কথায়, “ক্রমশ মানসিকতা পরিবর্তন হচ্ছে। সকলে মিলে এভাবে রক্তদানকে আন্দোলনের চেহারা দিলে থ্যালাসেমিয়া রোখা যেমন সহজ হবে তেমনই সুস্থ সমাজ গড়ে উঠবে।”