নিজস্ব সংবাদদাতা : উলুবেড়িয়া শহরের অদূরেই ১৯৬১ সালে গণেশ চন্দ্র সরকারের হাত ধরে গড়ে উঠেছিল কালীনগর উচ্চ বিদ্যালয়। যা আজ গ্রামীণ হাওড়ার অন্যতম অগ্রণী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছে। গণেশ বাবুর গড়ে তোলা স্কুলকে তিল তিল করে বড়ো করে তুলেছেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক মহম্মদ ফারুক। এই বিদ্যালয়েই দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর ধরে প্রধান শিক্ষক হিসাবে বিদ্যালয়ের প্রভূত উন্নতি করেছেন ফারুক বাবু। সামনের ডিসেম্বরেই তিনি অবসর গ্রহণ করবেন।
বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রায় সব লক্ষ্যপূরণ করতে সমর্থ হলেও তাঁর মনে একটা আক্ষেপ ছিল। সেই আক্ষেপের কথাই তিনি শুনিয়েছিলেন ওই বিদ্যালয়েরই প্রাক্তন পড়ুয়া তথা বর্তমানে বিদ্যালয়েরই করণিক শ্রীকান্ত খাঁড়াকে। তারপরই মুশকিল আসান! প্রধান শিক্ষকের স্বপ্ন তথা কালীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার ল্যাবরেটরি সংস্কার ও পুন:স্থাপনে উদ্যোগী হলেন শ্রীকান্ত বাবু নিজেই। সেই উদ্দেশ্যেই শুক্রবার দুপুরে বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের হাতে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলেন শ্রীকান্ত খাঁড়া।
উলুবেড়িয়ার বহিরার বাসিন্দা শ্রীকান্ত খাঁড়া জানান, “এই বিদ্যালয় থেকেই মাধ্যমিক পাশ করেছি। তারপর ১৯৮৯ সালের আগস্ট মাসে এখানেই করণিক হিসাবে যোগ দিই। কালীনগর হাইস্কুলের সাথে আমার আত্মিক যোগ। তাই স্যারের মুখে যখন শুনলাম তখন আর থাকতে পারলাম না। আমার প্রয়াত পিতৃদেবের স্মৃতি রক্ষার্থে বিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরি সংস্কার ও পুন:স্থাপনের উদ্দেশ্যে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের হাতে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলাম।”
শ্রীকান্ত বাবু বলেন, “আগামী ২০২২ এর নভেম্বরে অবসর নেব। তার আগেই বিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যার ল্যাবরেটরি দেখতে চাই।” আবেগঘন কন্ঠে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ ফারুক বলেন, “শ্রীকান্তর হাত ধরে আমার অধরা স্বপ্ন আজ পূরণের পথে। স্বার্থসর্বস্ব সমাজে শ্রীকান্তর এই মহৎ উদ্যোগ শুধুমাত্র সাধুবাদ যোগ্য নয়, অনুসরণ ও অনুকরণ যোগ্যও বটে। শ্রীকান্ত আমায় ঋণী করে গেল। আমৃত্যু আমি ওর কাছে আমৃত্যু কৃতজ্ঞ থাকব।”