নিজস্ব সংবাদদাতা : উলুবেড়িয়া শহরজুড়ে সর্বজনীন পুজোর সংখ্যা অনেক হলেও বাড়ির পুজোর সংখ্যা হাতেগোনা। উলুবেড়িয়ার বাড়ির পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম নোনা ব্যানার্জী বাড়ির শতাব্দীপ্রাচীন দুর্গোৎসব। এবছর ব্যানার্জী বাড়ির দুর্গোৎসব ১২৭ তম বর্ষে পদার্পণ করল। দশকের পর দশক কেটে গেলেও আজও পূর্বের সমস্ত রীতি মেনেই ব্যানার্জী বাড়িতে মাতৃ আরাধনা হয়। বছরভর দুর্গামূর্তি ব্যানার্জী বাড়িতে থাকে। ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, উলুবেড়িয়া শহর লাগোয়া নোনার ব্যানার্জী পরিবারের জ্যেষ্ঠ পুত্র যোগীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে এই দুর্গাপুজোর সূচনা হয়েছিল। যোগীন্দ্রবাবুর বয়স তখন ১০ বা ১২। নিজে হাতে মাটির দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে তিনি পুজোর সূচনা করেছিলেন। যদিও খেলার ছলে মাটির প্রতিমা তৈরি করতে বারণ করতেন তাঁর মা। যোগীন্দ্র বাবুর মা বলতেন ঠাকুর নিয়ে খেলা করতে নেই। কিন্তু পরবর্তী সময়ের তার হাতে তৈরি দেবী দুর্গা পূজিতা হন এবং আজ তা উলুবেড়িয়ার বুকে অন্যতম ঐতিহ্যবাহী শতাব্দী প্রাচীন দুর্গাপুজো। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
জানা যায়, সে সময় নিজেরাই ঠাকুর গড়ে নিজেরাই পুজো করতেন। যদিও এখন প্রতিমা গড়েন মৃৎশিল্পীরা। তবে ব্যানার্জী পরিবারের সদস্যরাই পুজো করেন। প্রায় সারা বছর ব্যানার্জী বাড়িতে মা থাকেন। নতুন প্রতিমা গড়ার আগে অব্ধি আগের বছরের প্রতিমা থাকে। রাম বিজয়ায় প্রতিমা বিসর্জন অনুষ্ঠিত হয়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, যোগীন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাবা কর্মসূত্রে ভিন রাজ্যে থাকতেন। পুজোর ছুটিতে ঘরে ফিরতে পারতেন না। বছরে বাড়ি ফেরার নির্দিষ্ট সময় থাকত না। মূলত সেই কারণেই দুর্গা প্রতিমা সারা বছর রাখা রীতি। শুধু প্রতিমা রাখাই নয়, নিত্য সেবাও দেওয়া হয়। শতাব্দীপ্রাচীন সেই রীতি আজও অটুট। পাশাপাশি, নবমীর দিন বেগুন পোড়া, পটল পোড়া, পান্তা ভাত রেখে দেওয়া হয়। বিজয় দশমীর দিন দেবী দুর্গা পান্তা এবং বেগুন ও পটল পোড়া খেয়ে কৈলাসে পাড়ি দেন, এমনটাই জানান ব্যানার্জী পরিবারের সদস্যরা। বিজয় দশমীর দিন নিয়ম মেনে দেবীর ঘট বিসর্জন হয়, কিন্তু ব্যানার্জী বাড়িতে মা থাকেন সারা বছর। শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী এই পুজোকে ঘিরেই ব্যানার্জী বাড়িতে এখন সাজো সাজো রব।