নিজস্ব সংবাদদাতা : রাত পোহালেই ২৫ শে বৈশাখ। বাঙালির হৃদ – স্পন্দন রবি ঠাকুরের আবির্ভাব তিথি উপলক্ষ্যে মেতে ওঠে বাংলার গ্রাম থেকে শহর। কতশত অনুষ্ঠান, আয়োজনে বাংলার রবিকে স্মরণ করে বাঙালি। কিন্তু, করোনার জেরে হঠাৎই বদলে গেছে সে-ই ছবিটা।
বন্ধ স্কুল – কলেজ – শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তাই এবার হয়ত অনাদরেই কাটবে বাঙালির ২৫ শে বৈশাখ। তবে এতে বিন্দুমাত্র দমে না-গিয়ে বাড়ির চার দেয়ালের গন্ডীর মধ্যে থেকেই খুদে পড়ুয়াদের নিয়ে কবিপ্রণামের অভিনব আয়োজন করতে উদ্যোগী হয়েছে গ্রামীণ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লকের গড়ভবানীপুর পুন্ডরীকাক্ষ প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয় সূত্রে খবর, লকডাউনের সমস্ত শর্ত মেনেই বাড়িতে বসেই ভার্চুয়াল রবীন্দ্র জয়ন্তী পালন করবে মৌপ্রিয়া, সায়ক, উৎসবদের মতো খুদে পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তার প্রস্তুতি। বিদ্যালয়ের সহ – শিক্ষক তথা অন্যতম উদ্যোক্তা সন্দীপ আদক জানান, “ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে থেকেই অভিভাবক – অভিভাবিকাদের ফোনের মাধ্যমে নাচ – গান-কবিতা-বক্তৃতা ভিডিও করে পাঠাচ্ছে।
আমরা এডিট করছেন। সংযুক্ত করা হবে ভাষ্যপাঠ। তারপর, আগামীকাল বিদ্যালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে আপলোড করা হবে।” বিদ্যালয়ের এই উদ্যোগে খুশি হয়ে এগিয়ে এসেছে অভিষেক, অনীক্ষার মতো বেশ কয়েকজন প্রাক্তনীও। বর্তমান পড়ুয়াদের পাশাপাশি তারাও অংশ নেবে এই সাংস্কৃতিক প্রয়াসে।
চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়া অস্মিতা সাঁত্রার কথায়, “অনেকদিন স্কুলে যাইনি। বন্ধুদের সাথে দেখা হয়নি। তাই মন খারাপ।হঠাৎ একদিন স্যার বাবাকে ফোন করে বিষয়টি জানালেন। তারপরই প্রস্তুতি শুরু করে দিই।” বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ‘শিক্ষারত্ন’ নুরুল আমিন বলেন, “এই দিনটির জন্য অধীর অপেক্ষায় থাকে আমাদের ছাত্রছাত্রীরা।
প্রতিবছর সাড়ম্বরে আমরা বিদ্যালয়ে কবিপ্রণামের অনুষ্ঠান করি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে একদিকে কবিপ্রণাম ও অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীদের একঘেঁয়েমি কাটাতে উদ্যোগী হয়েই আমরা এই আয়োজন করেছি। আমার দু’ই সহকর্মী সন্দীপ ও সৌভিকই মূলত সমগ্র বিষয়টি বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।” প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এহেন প্রয়াসকে একবাক্যে স্বাগত জানিয়েছেন সুখেন্দু চন্দ্র, শিলা মন্ডল, সোমা বেরার মতো অভিভাবক – অভিভাবিকারা।