নিজস্ব সংবাদদাতা : বাজছে সানাই, চত্বরজুড়ে আলোর রোশনাই। দূরদূরান্ত থেকে অতিথিরা আসতে শুরু করেছেন। কমবেশি সকলেরই হাতে উপহারের ঝোলা। তেমনই উপহারের ডালি নিয়ে ঢুকলেন একদল মানুষ। পরিবেশ রক্ষার্থে বিভিন্ন সংঠন বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকেই প্রায়শই দেখা যায় সচেতনামূলক প্রচার চালাতে।
কিন্তু বৌভাতের আসরে পরিবেশ রক্ষার বার্তা! সচারচর যা দেখা যায়নি, তারই সাক্ষী থাকলেন গ্রামীণ হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লকের সুলতানপুর গ্রামের বাসিন্দারা। সূত্রের খবর, গত ১০ই ফেব্রুয়ারী উদয়নারায়ণপুরের সুলতানপুরের বাসিন্দা উদ্ধব পাত্রের সাথে খলৎপুরের যুথিকা মুদির বিয়ে হয়। বৌভাত উপলক্ষ্যে ১২ ই ফেব্রুয়ারী উদ্ধবের বাসভবনে প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বৌভাতের আসরে আত্মীয়-স্থানীয় মানুষ-বন্ধুবান্ধব ছাড়াও আমন্ত্রিত ছিলেন উদয়নারায়ণপুরের টিম ভিলেজ বাইকার্সের সদস্যরা। উপহার স্বরূপ ভিলেজ বাইকার্সের সদস্যরা নবদম্পতির হাতে তুলে দিলেন শালপাতা ও মাটির গ্লাস। কেবলমাত্র নবদম্পতির জন্যই নয়,প্রীতিভোজে আগত প্রায় ৪৫০ জন নিমন্ত্রিত মানুষের জন্য এই আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান সংস্থাটির সদস্য পার্থ প্রতিম পাড়ুই।
পেশায় শিক্ষক পার্থ প্রতিম পাড়ুই জানান,”সমগ্র বিশ্বকে থার্মোকল ও প্লাস্টিক যখন গ্রাস করে নিচ্ছে,জীবকুল যখন বিপন্ন,সেরকমই এক ভয়াবহ সময়ে দাঁড়িয়ে জনমানসে সচেতন করার লক্ষ্যেই আমাদের এই উদ্যোগ।” এই উদ্যোগে স্বভাবতই খুশি নবদম্পতি।তাঁদের কথায়,”শালপাতা ও মাটির গ্লাসের ছোঁয়ায় আমাদের বৌভাতের অনুষ্ঠান এক নতুন মাত্রা পেল। “এই উদ্যোগে কনেপক্ষ থেকে পাত্রপক্ষের আমন্ত্রিত সকলেই খুশি।
পাত্রীর বাড়ি থেকে আগত সৌরভ ভৌমিক এহেন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন,পরিবেশ রক্ষার্থে আমাদের প্রত্যেকেরই উচিৎ প্রতি অনুষ্ঠান বাড়িতে পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহার করা।এই উদ্যোগে উদ্বুদ্ধ হয়ে আগামী দিনে তাঁর বাড়ির সমস্ত অনুষ্ঠানে শালপাতার থালা ও মাটির গ্লাস ব্যবহার করবেন বলে জানান পাত্রের বন্ধু তাপস শাসমল।
আমতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্তা অরুণ খাঁ ভিলেজ বাইকার্সদের এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়ে বলেন,”সুস্থ জীবন ও নির্মল পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যে সমাজের সকলকে সচেতন করতে হবে।তারই একটি ধাপ এই উদ্যোগ।”