নিজস্ব সংবাদদাতা : বৃদ্ধকে বেঁধে রেখে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। খোয়া গিয়েছে প্রায় পনের ভরি সোনার গহনা সহ নগদ প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা ও কয়েকটি দামী মোবাইল। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোররাতে শ্যামপুর থানার জয়নগর নস্করপাড়ায়।
জানা গেছে শনিবার ভোর রাতে পেশায় মিষ্টান্ন ব্যাবসায়ী রবীন্দ্রনাথ সাউ’র বাড়িতে পাঁচিল টপকে হানা দেয় ডাকাত দলটি। বাড়ির বাউন্ডারির ভিতর মুল বাড়ি সংলগ্ন ঘরে থাকা রবীন্দ্রনাথ সাউ এর শ্বশুর মদন দোয়ারীকে বাড়ির একটি পিলারের সাথে বেঁধে কোলাপসিবল গেটের তালা তালা ভেঙে বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে।
তারপর বাড়িতে থাকা মহিলাদের ভয় দেখিয়ে আলমারি ভেঙে প্রায় পনেরো ভরি সোনার গহনা ও নগদ প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরিবার সুত্রে জানা গেছে বাড়ির মালিক রবীন্দ্রনাথ সাউ এবং তাপস সাউ ও মানস সাউ ব্যাবসায়ীক সুত্রে ব্যারাকপুরে থাকে। সেখানেই তাদের মিষ্টির দোকান রয়েছে।
সেই কারণে শ্বশুর মদন সাউ ছাড়া বাড়িতে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ সাউ এর স্ত্রী রঞ্জনা সাউ এবং দুই বৌমা দেবযানী ও রূপালী সাউ। সেই সুযোগেই ছয় থেকে সাত জনের ডাকাতদল সহজেই বাড়িয়ে হানা দিয়ে ডাকাতি করে পালিয়ে যায়। পরিবার সুত্রে আরো জানা গেছে ঘরের উঠোনে কোনো কিছু পড়ে যাওয়ার আওয়াজ শুনে সন্দেহ হওয়ায়, রবীন্দ্রনাথ বাবুর স্ত্রী রঞ্জনা সাউ ফোনে বিষয়টি জানান বাইরের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা তার বাবা অর্থাৎ রবীন্দ্রনাথ বাবুর শ্বশুর মদন দোয়ারীকে।
মেয়ের ফোন পেয়ে টর্চ নিয়ে বাইরে বের হতেই তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ডাকাত দল। সেখানে তাকে পিলারের সাথে বেঁধে রেখে দেয়। ইতিমধ্যেই বাইরে চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ঘরের বারান্দায় বেরিয়ে রঞ্জনা দেবী দেখেন বাইরের কোলাপসিবল গেটের তালা ভাঙছে ডাকাত দল। তৎক্ষণাৎ তারা তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে একের পর এক ঘরের তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে আলমারি ভেঙে আলমারি থেকে গহনা ও নগদ টাকা লুঠ করে নেয়।
ডাকত দলের তান্ডবের মাঝে সবার অলক্ষ্যে নিজের ভাইকে ফোন করে সমস্ত ঘটনা জানান রঞ্জনা দেবী। খবর পেয়ে দ্রুত সেখানে পৌঁছে যায় পাশের পাড়ার বাসিন্দা রঞ্জনা দেবীর ভাই অরূপ দোয়ারী। তিনি বলেন আমি এসে দেখি পাঁচিল টপকে পালিয়ে যাচ্ছে কয়েকজন ডাকাত। আমি তাদের ধাওয়া করে একজনকে ধরেও ফেলেছিলাম। ওরা আমার কাঁধে রড দিয়ে আঘাত করে আমার হাত ছাড়িয়ে পালিয়ে যায়।
এলাকা সুত্রে জানা গেছে রবীন্দ্রনাথ বাবুর বাড়ির আশেপাশে কোনো বাড়ি না থাকায় এলাকার লোকজন কোনো আওয়াজ শুনতে পাননি। সেই কারণে ডাকাত দল প্রায় কুড়ি মিনিট ধরে লুটপাট চালিয়ে পালিয়ে গেলেও, কেউ কিছু বুঝতে পারেননি। শ্যামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভাঙা তালা সহ বেশকিছু নমুনা সংগ্রহ করে। এরপর ঘটনাস্থলে পৌঁছান উলুবেড়িয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পার্থ ঘোষ। তিনি পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে শ্যামপুর থানার পুলিশ।