নিজস্ব সংবাদদাতা : গত পরশু রাতে ঘটা ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তপ্ত বাগনান। বাগনান কান্ডে মৃত মহিলার দেহ নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করার সময় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক যুবকের উপর অস্ত্র নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠল এক দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে।
আর সেই ঘটনাকে ঘিরেই আবারও রণক্ষেত্রের চেহারা নিল গোপালপুর গ্রাম। গত পরশু রাতে বাগনান থানার গোপালপুর গ্রামে তৃণমূল নেতার লালসার হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে মা’য়ের মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল দিনভর বিক্ষোভ, অবরোধে উত্তাল হয়ে ওঠে বাগনান। গতকালই বাগনানে আসেন বিজেপির দু’ই সাংসদ লকেট চ্যাটার্জী ও সৌমিত্র খাঁ। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর আজ সকালে মহিলার মৃতদেহ নিয়ে উলুবেড়িয়া কোর্টের সামনে ও.টি রোড অবরোধ করেন শ’খানেক বিজেপি কর্মী-সমর্থক।
তাঁদের পক্ষ থেকে আইনজীবীদের অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল না করার আর্জি জানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল সহ জেলা বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখান থেকে সীমা দত্তের মৃতদেহ নিয়ে মিছিল করে বাগনানের গোপালপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন বিজেপির কর্মীরা।
অভিযোগ, গোপালপুর গ্রামের মধ্য দিয়ে মিছিল যাওয়ার সময় হঠাৎই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা কুশ বেরার বাড়ি থেকে এক দুষ্কৃতী দা নিয়ে বেরিয়ে এসে মিছিলে অংশ নেওয়া এক যুবকের উপর অতর্কিতে হামলা চালায়।
দুষ্কৃতীর দা’য়ের কোপে গুরুতর আঘাত পান ওই যুবক। মৃন্ময় দত্ত নামের ওই যুবককে সঙ্গে সঙ্গে বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে কোলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার পরই নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোপালপুর গ্রাম।
অভিযোগ, ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় অভিযুক্ত কুশ বেরার বাড়িতে। ভেঙে দেওয়া হয় বাড়ির সমস্ত আসবাবপত্র। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকার মানুষ। এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশবাহিনী ও র্যাফ।
মিছিলে হামলাকারী ওই দুষ্কৃতীর গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। যদিও এখনো অব্ধি সংশ্লিষ্ট দুষ্কৃতীর নাম ও পরিচয় জানা যায়নি বলে জানা গেছে। গোপালপুর গ্রামে গিয়ে ওই কলেজ পড়ুয়ার সাথে দেখা করেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল।
তিনি ওই ছাত্রী ও তার পাশে থাকার আশ্বাস দেন। অন্যদিকে, আজ দুপুরে বাগনানে ঘটা এই নৃশংস কান্ডে ধৃত কুশ বেরা সহ অভিযুক্তদের উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হলে বিচারপতি ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।