নিজস্ব সংবাদদাতা : পরিবার-পরিজন ত্যাগ করে রাতদিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। অন্যদিকে, মাইলের পর মাইল হেঁটে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে বাড়ি ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। কেউ রাস্তাতেই প্রাণ হারাচ্ছেন আবার কেউবা ক্লান্ত শরীরে বাড়ির দ্বারে এসে হাজির হয়েছেন। আবার কাজ হারানো দিন আন দিন খাওয়া মানুষের পাশে ত্রাণের সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন একদল মানুষ। মার্চের শেষ দিক থেকে এই সামগ্রিক চিত্রটাই সমাজের দ্বারে উঠে আসছিল।
মহামারীর এই দুঃসময়ে দাঁড়িয়ে করোনা যোদ্ধাদের কুর্নিশ জানিয়ে এবার কালীপুজোয় এই সামগ্রিক ভাবনাকেই শৈল্পিক নির্দশনের মাধ্যমে তুলে ধরল গ্রামীণ হাওড়ার আমতার ফতেপুর দেবদূত সংঘ। ফতেপুর দেবদূত সংঘের পুজো এবার ১৭ তম বর্ষে পদার্পণ করল। করোনার জেরে আড়ম্বহীন পুজোয় কমেছে বাজেট। কিন্তু শৈল্পিক ভাবনায় বিন্দুমাত্র ঘাটতি রাখেনি সংঘের সদস্যরা। এবার এখানে মৃন্ময়ী মা’কে করোনা যোদ্ধা চিকিৎসক রূপে তুলে ধরা হয়েছে। মা’য়ের পাশেই স্থান পেয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিক। ফ্রেমে করোনার প্রতীকী চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে।
এর পাশাপাশি, করোনা যোদ্ধাদের উৎসর্গ করে মন্ডপে স্মারকও তৈরি করা হয়েছে। মন্ডপ জুড়ে শালপাতায় করোনা সম্পর্কে বিভিন্ন বার্তা দেওয়া হয়েছে। পুজোর অন্যতম আয়োজক সোনু পাড়ুই জানান,”আমরাই ছাত্রাবস্থায় এই পুজোর সূচনা করেছিলাম। মূলত এলাকার কয়েকজন যুবকের উদ্যোগেই এই পুজো। প্রতিবছর প্রায় দু’লক্ষ টাকার বাজেট রাখা হয়। কিন্তু, এবার বাজেট কাটছাঁট করে ষাট হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন,”মহামরী পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ, প্রশাসনিক কর্তারা যে লড়াই যাচ্ছেন তা সত্যিই দৃষ্টান্ত। তাঁদের সম্মান জানাতেই অনন্য প্রতিমার মধ্য দিয়েই এই ভাবনাকে তুলে ধরেছেন আমতার মৃৎশিল্পী গোপাল পাল। আর প্রতিবছরের মতো এবারও আমাদের সদস্যরা রাতদিন এক করে নিজ শৈল্পিক ভাবনা ও দক্ষতার মাধ্যমে এই মন্ডপ তৈরি করেছেন।” প্রতিবছরই এই পুজোকে ঘিরে উন্মাদনা থাকে চোখে পড়ার মতো। এবারও তার খামতি নেই। মুখে মাস্ক লাগিয়ে বহু মানুষই আসছেন এই অনন্য প্রতিমা দর্শনে।