নিজস্ব সংবাদদাতা : তৃনমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফলে বাড়ি ছাড়া পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এলাকার দলের বিধায়কের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। তার আরও অভিযোগ দলনেত্রীর কাছে অভিযোগ জানানোর পরেই তার স্বামীর ছবি ফটোশপের মাধ্যমে বিকৃত করে তাকে বি জে পি কর্মী প্রমাণ করতে, সেই ছবি বিলি করা হয়েছে দলের নেতাদের কাছে। হাওড়া গ্রামীণ এলাকার পাঁচলার জলাবিশ্বনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। জানা গেছে এই গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই বারের প্রধান তৃনমূলের সাবিনা বেগম মোল্লা। তার অভিযোগ গতবারে প্রধান থাকার সময় পঞ্চায়েতের কাজের দশ শতাংশ টাকা ঠিকাদারদের কাছ থেকে নিয়ে আর এক নেতা মারফত পাঁচলার বিধায়ক গুলশান মল্লিককে দিতে হতো। বিধায়কের নির্দশে এই বছর থেকে সেই কমিশন বাড়িয়ে কুড়ি শতাংশ করতে বলা হয়। তার দাবি তিনি বিধায়ককে জানান কুড়ি শতাংশ টাকা কমিশন হিসাবে বেরিয়ে গেলে কাজের গুনগত মান খারাপ হবে এবং উন্নয়নের কাজ ব্যাহত হবে। তার অভিযোগ এর পর থেকেই তার বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু হয়। তার পরেই তাকে প্রধান পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলেন বিধায়ক গুলশান মল্লিক।
তিনি আরো বলেন শুধু পদত্যাগ করতে বলাই নয় অন্যান্য পঞ্চায়েতের সদস্যদের তার বিরুদ্ধে নিয়ে যাওয়ার জন্য, প্রভাব খাটাতে শুরু করেন। কিছুটা বাধ্য হয়েই গত দশই অক্টোবর তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করেন। তার দাবি সব শুনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে কাজ চালিয়ে যেতে বলেন বলেও তিনি দাবি করেন। তার আরও অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দেখা করার পর থেকেই তার স্বামীকে মেরে ফেলার চক্রান্ত চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি তার অনুরাগী স্থানীয় বাসিন্দা সেখ মাসিবুল ইসলাম, ইব্রাহিম মোল্লার বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বিধায়কের অনুগামীরা। তার দাবি ক্রমাগত হুমকিতে ভীত হয়ে তিন মেয়ে স্বামীকে নিয়ে এলাকার বাইরে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ সুপারের কাছে তিনি অভিযোগ জানিয়েছেন বলেও তিনি জানান। তিনি কেন এতদিন আইন বহির্ভূত ভাবে দশ শতাংশ কমিশন দিতেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে সাবিনা বলেন বিধায়ক তাকে বলেছিলেন দলের স্বার্থে এই টাকা দিতে হবে। বিধায়কের চাপে বাধ্য হয়েই তিনি দশ শতাংশ টাকা দিতেন বলে তিনি জানান। পাঁচলার বিধায়ক গুলশান মল্লিক সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন জলাবিশ্বনাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পনেরো জন সদস্যই তৃনমূলের। তার মধ্যে চোদ্দজনই প্রধানের বিরুদ্ধে। তিনি আরো বলেন কোনো কমিশনের টাকায় তৃনমূল কংগ্রেস চলেনা। তার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। এই প্রধান পঞ্চায়েতের বিভিন্ন খাতে যে খরচ দেখিয়েছেন তার সাথে বাস্তবের কোনো মিল নেই। দলের কর্মীরা চায় পাঁচলা বিধানসভা এলাকার প্রতিটি পঞ্চায়েত স্বচ্ছতার সাথে কাজ করুক। তার দাবি প্রধান নিজেই দূর্নীতির সাথে যুক্ত। নিজের দুর্নীতি আড়াল করতে, আমার নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে।