নিজস্ব সংবাদদাতা : দেশজুড়ে চলছে দীর্ঘ ২১ দিনের লকডাউন। যার জেরে গণপরিবহন পুরোপুরি স্তব্ধ। জাতীয় সড়ক কিংবা রাজ্য সড়ক পুরোপুরি শুনশান। বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর আসছে এই সুযোগে বন্যপ্রাণীরা বেশ কিছুটা হাঁফ ছেড়ে ঘুরে বেড়াতে শুরু করেছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও প্রাণীদের এইরকম ঘুরে বেড়ানোর ছবি বা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
পাশাপাশি, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শনের আহ্বানও দেখা গেছে। ফাঁকা রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো এইসব প্রাণীদের বিপদ বাড়ছে অন্যভাবে। রাস্তা শুনশান থাকায় গাড়ির গতিও অন্যান্য সময়ের তুলনায় অনেকটাই বেশি। অন্যদিকে, ফাঁকা রাস্তা পেয়ে পাশ্ববর্তী জঙ্গল থেকে আচমকাই বেড়িয়ে আসছে বিভিন্ন প্রাণী। আর হঠাৎ করে আসা গাড়ীর ধাক্কায় প্রাণ হারাচ্ছে তারা। বন্যপ্রাণীদের রাস্তায় দুর্ঘটনায় মৃত্যু আগেও একটা বড় সমস্যা ছিল।
গ্রামীণ হাওড়ায় দীর্ঘদিন ধরে এই নিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন বিশিষ্ট গবেষক ও পরিবেশকর্মী সৌরভ দোয়ারী। তাঁর কথায়, “সাধারণত সন্ধ্যা ও ভোরের দিকে এই ধরনের দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশী ঘটে। আকারে একটু বড়ো বা খুব মন্থর প্রাণীরাই মূলত গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারায়। কিন্তু, লকডাউনে এই চিত্রটার অনেকটাই পরিবর্তন ঘটেছে বলে মনে করছেন পরিবেশকর্মীরা।
গত কয়েকদিনে আমতা, উদয়নারায়ণপুর সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে দিনের বেলা কাঠবিড়ালির মতো ক্ষিপ্র প্রাণীদের একাধিক দুর্ঘটনার কথা খবর মিলেছে। সাথে ভাম, খটাস ও বিভিন্ন প্রাণীরাও আছে। “গ্রামীণ হাওড়ায় সবচেয়ে বেশী পথ দুর্ঘটনায় মারা যেতে দেখা যায় আকারে একটু বড় স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ প্রাণীদের।
যার মধ্যে বাঘরোল অন্যতম। ইতিমধ্যে বাঘরোল পারাপার হওয়ার বিভিন্ন করিডরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিশেষ সাইনবোর্ডেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ছোট স্তন্যপায়ী, পাখিদেরও পথ দুর্ঘটনায় মারা যেতে দেখা যাচ্ছে।
পেশায় শিক্ষক সৌরভ দোয়ারী এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানান ,”পূর্বে প্রাণীরা সাধারণত দিনেরবেলায় গাড়ী চলাচলের রাস্তা এড়িয়ে চলতো, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সেইসব রাস্তারও নির্জন। সেই সুযোগে সেখানে প্রাণীরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে। হঠাৎ গাড়ী চলে এলেই ঘটছে বিপত্তি। প্রকৃতির বুক থেকে কার্যত অবলুপ্ত হতে বসেছে কাঠবেড়ালি, ভাম, খটাসের মতো প্রাণীরা। তার উপর এই ধরনের ঘটনা – চিন্তায় ফেলেছে পরিবেশকর্মীদের।