নিজস্ব সংবাদদাতা : সাংবাদিকদের সম্পর্কে কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের নিন্দায় সরব হয়েছে বিভিন্ন মহল। সাংসদ যখন সাংবাদিকদের ‘দু পয়সার’ দাম নির্ধারণে ব্যস্ত তারই মাঝে এক মুমূর্ষু রোগীকে রক্তদান করতে এগিয়ে এলেন হাওড়ার এক সাংবাদিক। মঙ্গলবার দেশজুড়ে কৃষকদের ডাকা বন্ধকে ঘিরে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তেই পথে নেমেছিলেন বন্ধকারীরা। তাই সকাল ৬ টা’তেই চায়ের কাপে কোনোরকমে চুমুক দিয়েই আর পাঁচজন সাংবাদিকের মতোই বেড়িয়ে পড়তে হয়েছিল হাওড়ার দেবাশিস চক্রবর্তীকে। ঝান্ডা হাতে পথে নেমেছিলেন বহু মানুষ। রাজপথের মাঝে জ্বলছে টায়ার। হঠাৎই বেজে উঠল দেবাশিসের ফোন।
ফোনের ওপার থেকে এক মহিলার কন্ঠে ভেসে উঠল, “একটা B+ রক্ত লাগবে।” বন্ধের বাজারে এখন কোথায় মিলবে রক্ত! তাই সাতপাঁচ না ভেবেই এপ্রান্ত থেকে উত্তর গেল, “আমি দেবো।” হাওড়া শহরের বিভিন্ন জায়গায় বন্ধের কভার সেরে কথামতো সকাল সাড়ে এগারো টায় পৌঁছে গেলেন হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে। মারণরোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত এক মধ্যবয়স্কা মহিলার প্লেটলেট প্রয়োজন। দুপুর ১২ টা থেকে শুরু হল পরীক্ষা।
বিকেল ৪ টেয় শুরু হল প্লেটলেট কালেকশনের কাজ। ১ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলল প্রায় প্লেটলেট কালেকশনের কাজ। নিজের বোনের জন্য প্লেটলেট পেয়ে অনেকটাই স্বস্তিতে এশিয়াডে সাতবারের সোনাজয়ী কোলকাতা পুলিশের এক মহিলা টিম লিডার ও তাঁর পরিবার। দেবাশিসের কথায়, “সাংবাদিকতার পাশাপাশি মানুষের পাশে বিপদে-আপদে থাকার সাধ্যমতো চেষ্টা করি। তাই বন্ধের দিনে যখন বোন ফোনে বলল রক্তের প্রয়োজন তখন কাকে আর পাব। তাই সাথে সাথেই ঠিক করলাম আমিই হাসাপাতালে গিয়ে রক্ত দেব।” মুমূর্ষু রোগীকে রক্ত দেওয়ার পর কৃষ্ণনগরের সাংসদের উদ্দেশ্যে দেবাশিসের বার্তা, “আমরা দু’পয়সার সাংবাদিক। তাই আমরা পারি। আপনি পারবেন না এমপি ম্যাডাম।”