নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনা আবহে দাঁড়িয়ে দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ সরকার দুর্গাপুজোয় অনুমতি না দিলেও বাংলায় দুর্গাপুজোয় অনুমতি মিলেছে। তবে মাস্কে ব্যবহার সহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ মেনে চলার কথা বারবার বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার একই পথে হাঁটল হাওড়া সিটি পুলিশ। মাস্ক না পরলে পুজো মন্ডপে কোনোভাবেই প্রতিমা দর্শন করতে দেওয়া যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিল হাওড়া সিটি পুলিশ। আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার হাওড়া সিটি পুলিশের উদ্যোগে হাওড়ার শরৎ সদনে হাওড়া শহরের বিভিন্ন পুজোকমিটিগুলোকে নিয়ে একটি সাধারণ সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়।
সমন্বয় সভায় হাওড়ার পুলিশ কমিশনার কুণাল আগরওয়াল জানান, “করোনা পরিস্থিতিতে সতর্কতা হিসাবে এবার ‘নো মাস্ক,নো প্যান্ডেল’। মাস্ক পরে মন্ডপে এলে তবেই প্রতিমা দর্শন করা যাবে। মন্ডপের বাইরে প্রথমে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত জীবাণুমুক্ত করানো হবে। এরপর সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে মন্ডপে প্রবেশ করানো হবে। মন্ডপের ভীড় আগে থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হবে। একসঙ্গে কোনোভাবেই যাতে না ভিড় হয় সেদিকে পুলিশ প্রশাসন নজর রাখবে। কোভিড-বিধি মেনেই পুজোর আয়োজন করতে হবে। ভীড় এড়াতে মন্ডপের সামনে ফুড স্টল রাখা যাবেনা। সকলকে সোস্যাল ডিসট্যান্স মেনে চলতে হবে। কেউ প্রতিমা দর্শন করতে এসে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে যাতে না চিকিৎসাকেন্দ্রে পৌঁছাতে কোনও অসুবিধা হয় সেদিকেও বিশেষ নজর রাখা হবে। মন্ডপের সিসিটিভির রেকডিং একমাস পর্যন্ত রাখতে হবে।”
কমিশনার আরও জানান, পুজোর দিনগুলিতে অপরাধমূলক ঘটনা রুখতে হাওড়া সিটি পুলিশ গোয়েন্দা বিভাগের ‘অ্যান্টি ক্রাইম টিম’ এবার মন্ডপে মন্ডপে নজরদারি চালাবে। রাস্তায় বা পুজো মন্ডপে ইভটিজিং রুখতে মহিলা পুলিশের স্পেশাল টিমও রাস্তায় টহল দেবে। যেসব মন্ডপে ভিড় বেশি হয় সেই সব জায়গা চিহ্নিত করে ড্রোনের মাধ্যমে এবার নজর রাখা হবে। পুলিশ সহায়ক বুথের পাশাপাশি এবার কয়েকটি জায়গায় বসানো হচ্ছে ওয়াচ টাওয়ার।
এদিনের সভায় হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি হেড কোয়ার্টার জানান, এবার করোনা জেরে প্রতিমা বিসর্জনে শোভাযাত্রা বা কার্নিভাল করা যাবেনা। ভাসানে গাড়ি পিছু ছ’জনের বেশি অনুমতি মিলবে না। গঙ্গার ঘাটেও ভীড় করা যাবেনা। এবার পুজোয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা মেলা করা যাবেনা। অঞ্জলি বা সিঁদুর খেলায় ভিড় করা যাবেনা। তা ধাপে ধাপে করতে হবে। প্রয়োজনে মার্কিং সার্কেল করে দিতে হবে। মন্ডপ তিনদিক খোলা রাখতে বলা হয়েছে। মাস্ক এবং স্যানিটাইজার এবার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দল বেঁধে এবার পুজো পরিক্রমা করা যাবেনা। আগামী তৃতীয়া থেকে দশমী পর্যন্ত যেহেতু মানুষ প্রতিমা দর্শন করতে বের হবেন তাই রাস্তায় পুলিশের নজরদারি থাকবে।২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯ অক্টোবর হাওড়ায় পুজোর ভাসানের দিন নির্ধারিত করা হয়েছে।
এদিনের সমন্বয় বৈঠকে মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, “এখনও অনেকের মধ্যেই সচেতনতার অভাব রয়েছে। তাই আসন্ন পুজোয় স্বাস্থ্য দফতরের কোভিড নির্দেশিকা মেনে চলুন। মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।” এদিনের সমন্বয় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য, পুর কমিশনার ধবল জৈন, বিধায়ক জটু লাহিড়ী, শীতল সর্দার প্রমুখ। সমন্বয় সভা থেকে হাওড়া সিটি পুলিশের পুজো গাইড ম্যাপ প্রকাশ করা হয়।