নিজস্ব সংবাদদাতা : দীর্ঘ লকডাউনে কোনোরকমে আধপেটা অবস্থায় দিন কাটিয়ে মাইলের পর মাইল পথ হাঁটছেন বা সাইকেল চালাচ্ছেন বহু মানুষ। লক্ষ্য নিজের পরিবার, পরিজনের কাছে ফেরা। দীর্ঘ যাত্রাপথেই ক্লান্ত হয়ে কারুর জীবনের পথ থেমে যাচ্ছে কেউবা আবার নিজের অভিষ্ট্য গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছেন। সেরকমই অদম্য লড়াই আর জেদের যুগলবন্দীতে ভরসা রেখে প্যাডেলে পা রেখেছিলেন কিশোর সাহু। সেই প্যাডেলে ভরসা রেখেই দীর্ঘ ৬৫০ কি.মি. পথ অতিক্রম করে ফিরলেন নিজের মাটতে। বারাণসীতে রিক্সা চালিয়ে কোনোরকমে দিন চলে হাওড়ার বালির কিশোর সাহুয়ের। একদিন বা দু’দিন নয় দীর্ঘ প্রায় ৪০ বছর ধরেই এই পেশায় আছেন কিশোর। নিত্যদিনের রোজগার দীর্ঘ প্রায় দু’মাস বন্ধ থাকায় আগেই ফুরিয়েছে নগদ অর্থ। খাদ্য রসদ নেই বললেই চলে।
তাই প্যাডেলেই পেট চলা কিশোর প্যাডেলকেই বেছে নিলেন লকডাউনে নিজের পরিবারের কাছে ফিরতে। জানা গেছে, যৎসামান্য টাকা আর নিজের কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়েই বারাণসীর ভারত সেবাশ্রমের অস্থায়ী ঠিকানা ছেড়ে গত ২৮ শে মার্চ তিনি প্যাডেলে পা রাখেন হাওড়ার বালির উদ্দেশ্যে। আট দিনের মাথায় ঝাড়খণ্ডে এসে পৌঁছান কিশোর। কিন্তু, আন্তঃরাজ্য সীমান্ত সিল থাকায় বাংলায় ঢোকার ছাড়পত্র মেলেনি। মাইথন পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে স্থানীয় রিলিফ ক্যাম্প বা কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চলছিল থাকা খাওয়া। অবশেষে, কেন্দ্রের ঘোষণার পর পশ্চিমবঙ্গ – ঝাড়খণ্ড সীমান্ত খুললে নির্দিষ্ট শারীরিক পরীক্ষার পর রাজ্যে ঢোকার অনুমতি পান কিশোর। তারপর, আসানসোল,বর্ধমান হয়ে নিজের শহর হাওড়া। এভাবেই প্যাডেলে ভরসা রেখে পাড়ি দিলেন দীর্ঘ ৬৫০ কি.মি পথ। সত্যিই এ এক অন্য লড়াই।