নিজস্ব সংবাদদাতা : খামখেয়ালী আবহাওয়ার জেরে উলুবেড়িয়ার বাগনানের বিভিন্ন এলাকায় গোলাপ গাছে দেখা দিয়েছে অজানা রোগ। রোগের জেরে গাছের পাতায় ধরছে কালো দাগ। ঝড়ে যাচ্ছে ফুল। ফলত চরম সমস্যায় পড়েছেন এলাকার ফুল চাষীরা। বাগনানের ঘোড়াঘাটা, দেউলটি, রবিভাগ সহ একাধিক এলাকার কয়েকশো বিঘা জমিতে হয় গোলাপ চাষ।
আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনায় চলতি বছরে বারে বারে সমস্যায় পড়েছেন ফুল চাষীরা। কখনো অনাবৃষ্টি কখনো বা নিম্নচাপের প্রভাবে অতি বৃষ্টিতে নষ্ট হয়েছে ফুল চাষ। কিছুদিন আগেই ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল ফুল চাষীদের। নতুন করে শুরু করেছিলেন তারা। কিন্তু বৃহস্পতিবারের অকাল বৃষ্টির ফলে আবারো নষ্ট হতে চলছে গোলাপ চাষ।
এক চাষী পুলক ধাড়া বলেন আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনায় গোলাপ গাছের এক অজানা রোগ দেখা যাচ্ছে। পাতায় কালো রঙের টিপটিপ দাগ পড়ছে। পাশাপাশি ঝরে যাচ্ছে ফুলের পাপড়ি। এই ফুলতো বিক্রি হবেইনা। উপরন্তু গাছ গুলিও বাঁচানো যাবেনা। ফলত নতুন গাছ তৈরি করতেও সমস্যায় পড়তে হবে। আর এক চাষী প্রশান্ত খাঁড়া বলেন এই গোলাপ চাষের উপরেই আমরা নির্ভরশীল।
বড় ক্ষতি হয়ে গেলো। গাছ নষ্ট হয়ে গেছে, ফলত নতুন গাছ তৈরি করতেও পারবোনা। পরবর্তীতে কিভাবে আবার চাষ করবো, বুঝে উঠতে পারছিনা। সরকারি সাহায্য না পেলে না খেয়ে মরতে হবে।ফুলের পাশাপাশি উলুবেড়িয়ার বাসুদেবপুর, তুলসীবেড়িয়া, খলিশানি সহ একাধিক এলাকায় পান চাষের ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অকাল বৃষ্টির ফলে পান গিছে দেখা গিয়েছে একপ্রকার ধসা রোগ। রোগের ফলে পান পাতায় একপ্রকার দাগ দেখা যাচ্ছে এবং পানের পাতা খসে যাচ্ছে।
পাশাপাশি বরোজে হাওয়া ঢুকে যাওয়ার ফলে ঝড়ে যাচ্ছে পান। এক পান চাষী বিশ্বনাথ মাইতি জানান সত্তর বছর বয়স হয়ে গেলো কোনবছর এত খারাপ অবস্থায় পড়িনি। তিনি বলেন হাওয়া বা বৃষ্টির জল ঢোকা আটকাতে ত্রিপল ও পলিথিন দিয়ে ঘেরা হয়েছে পান বোরোজ। তার জন্য খরচ হয়েছে অনেক টাকা। তাসত্ত্বেও গাছ বাঁচানো গেলোনা। তাদের দাবি পানে দাগ ধরে যাওয়ার কারণে আগে হাজার পান বিক্রি হতো আটশো থেকে নয়শো টাকা দরে।
এখন দাম গিয়ে দাঁড়িয়েছে পঞ্চাশ থেকে একশো টাকায়। আর এক পান চাষী অষ্ট কোলে বলেন নিজের জমি নেই। অন্যের জমিতে পান চাষ করি।দুশো গাছের বরোজের জন্য জমির মালিককে পঁচিশ হাজার টাকা দিতে হয়। এমনিতেই ধারদেনা করে চাষ করেছিলাম। কিভাবে জমির মালিকের টাকা মেটাবো জানিনা। সরকার থেকে কোনদিন কোন সাহায্য পাননি বলেও তিনি জানান।সারা বছর জুড়ে একের পর এক কারণে তাদের চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও তিনি জানান।