নিজস্ব সংবাদদাতা : রাখি পূর্ণিমা ভারতের একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। হিন্দু, জৈন ও শিখরা এই উৎসব পালন করে থাকেন। ভাই ও বোনের মধ্যে প্রীতি বন্ধনের এই উৎসব। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব উদযাপিত হয়। জানা যায়, মহাকাব্য থেকে ইতিহাস- নানান ঘটনা রাখিবন্ধনের উৎস হিসাবে বিবেচিত হয় । ক্রমে এই উৎসব জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
এই উৎসবের উৎস হিসাবে এক পৌরাণিক ঘটনাকে ধরা হয়। ভারতের অন্যতম প্রাচীন মহাকাব্য মহাভারত অনুসারে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ ও দ্রৌপদীর এক সম্মান রক্ষার ঘটনাকে রাখি বন্ধন এর মূল ভিত্তি বলে জানা যায়। কথিত আছে শ্রীকৃষ্ণ শিশুপাল কে বধ করার পর কৃষ্ণের হাতের এক অংশে আঘাত লেগে রক্তপাত শুরু হয়, তা দেখে তৎক্ষণাৎ পাণ্ডবদের স্ত্রী দ্রৌপদী তার শাড়ির আঁচল ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন।
এতে কৃষ্ণ অভিভূত হয়ে দ্রৌপদী কে নিজের বোন বলে ঘোষণা করেন এবং উপকারের প্রতিদান দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। পরবর্তীতে কৌরবরা দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ করতে গেলে কৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মান রক্ষা করে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন। এই ভাবেই সবচেয়ে প্রাচীন ভাবে রাখি বন্ধনের প্রচলন হয়।
আবার, ঐতিহাসিকভাবে জানা যায় একটি জনপ্রিয় গল্প। আনুমানিক ৩২৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে আলেকজান্ডার ভারত আক্রমণ করে। জানা যায়, আলেকজান্ডারের স্ত্রী রাজা পুরু কে এক পবিত্র সুতো পাঠিয়ে তাকে অনুরোধ করেছিলেন যাতে রাজা পুরু যেন আলেকজান্ডারের কোন ক্ষতি না করেন। রাজা পুরু রাখি কে সম্মান করতেন। তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে আলেকজান্ডার কে কোন আঘাত করেননি।
অন্যদিকে, বহুল প্রচলিত যা মানুষ সবচেয়ে বেশি জানেন রাখি বন্ধনের মূল ইতিহাস বলে তা হল 1905 সালে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ করার জন্য বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রাখি বন্ধন উৎসব পালন। তিনি হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব বোধ জাগিয়ে তোলা ও ব্রিটিশদের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য রাখি বন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন।