নিজস্ব সংবাদদাতা : ১৩ বছর বয়স থেকেই হাইসুগার, পরিবারে দারিদ্রতার করাল অন্ধকার। এরই মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ব্যাপক সফলতা উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ কলেজপাড়ার বাসিন্দা সায়ন থোকদারের। উচ্চমাধ্যমিকে ৪৭৭ নম্বর পেয়ে সে এখন অঙ্ক বিষয় নিয়ে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষে পাঠরত। মানবিক রাজ্য সরকারের কাছে তার কাতর আবেদন চিকিৎসা আর উচ্চশিক্ষার জন্য কিছু আর্থিক সাহায্যের। খুব অল্প বয়স থেকেই মধুমেহ রোগে আক্রান্ত রায়গঞ্জের কলেজপাড়ার বাসিন্দা সায়ন থোকদার। সায়নের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৩ বছর বয়সে সপ্তম শ্রেনীতে পাঠরত থাকাকালীন তার হাইসুগার ধরা পড়ে। তখন থেকেই নিয়ম করে প্রতিদিন চারবার করে ইনসুলিন সহ অন্যান্য ওষুধ নিতে হয় সায়নকে। বাবা প্রদীপ থোকদার সামান্য একজন বেসরকারি সিকিউরিটি গার্ড, মাসে ৪২০০ টাকা মাত্র রোজগার। বাবা মা ও এক ভাই নিয়ে চারজনের সংসার।এই সামান্য টাকা দিয়ে সংসারের খরচ চালানোর পাশাপাশি সায়নের চিকিৎসা ও পড়াশুনার খরচ চালানো সায়নের বাবা প্রদীপ থোকদারের পক্ষে খুবই দুস্কর। একদিকে চরম দারিদ্রতা তার উপর শারীরিক অসুস্থতা এই অবস্থাতেই এবারের উচ্চমাধ্যমিকে সায়ন ৪৭৭ নম্বর পেয়েছে।বর্তমানে অঙ্ক বিষয় নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবর্ষে সে পড়াশুনা করছে। স্বপন অঙ্কের অধ্যাপক হওয়ার। তাঁর সেই স্বপ্নের প্রধান অন্তরায় সংসারের আর্থিক অনটন। প্রতিমাসে তার ইনসুলিন সহ অন্যান্য চিকিৎসা খরচ প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। একপ্রকার অর্ধাহার অনাহারে জীবনযুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে গোটা পরিবার।ইনসুলিন রাখার জন্য আগে টবে মাটির নীচে গুঁজে রাখত সে। সম্প্রতি সায়নের স্কুল রামকৃষ্ণ বিদ্যাভবন থেকে একটি ফ্রিজ দান করায় কিছুটা সুবিধা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সুগারের চিকিৎসা ও উচ্চশিক্ষার পড়াশুনার খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারের চারজনের অন্নের সংস্থান করাই দুঃসহ হয়ে উঠেছে তাদের। সায়নের বাবা প্রদীপ থোকদার বলেন, আমি নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করি। যা আয় হয় তার বেশিরভাগটাই সায়নের চিকিৎসার জন্য খরচ হয়। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছেলের চিকিৎসা ও উচ্চ শিক্ষার খরচ জুগিয়ে সংসার প্রতিপালন করা সম্ভব হচ্ছেনা।সরকারি সাহায্য পেলে খুবই উপকৃত হতেন তিনি। রাজ্য সরকার সহ রায়গঞ্জের বিধায়ক ও সাংসদের কাছে সাহায্যের জন্য দরবার করবেন তিনি। এদিকে সায়নের দাবি অঙ্ক নিয়েই উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যেতে চায় সে।ভবিষ্যতে অধ্যাপক হওয়ার ইচ্ছে তার। কিন্তু বাধ সাধছে মধুমেহ। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন কেমেষ্ট্রি পরীক্ষার দিনও হাইসুগার থাকার কারনে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হতে হয়েছিল তাকে। সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানিয়েছেন সায়ন নিজেও। তাঁর বক্তব্য, সরকারি সাহায্য পেলে চিকিৎসার খরচ জুগিয়ে উচ্চ শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া সম্ভব।
মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ব্যাপক সফলতা উত্তর দিনাজপুর জেলার মধুমেহ রোগে আক্রান্ত সায়নের
Published on: