নিজস্ব সংবাদদাতা : লুকোচুরি খেলা, সাইকেলের পরিত্যক্ত টায়ার ঘোরানো, সুপারি পাতা দিয়ে গাড়ি বানানো, রাস্তার মাঝে গুলি খেলা — কয়েক দশক আগেও এসব ছিল গ্রাম বাংলার নিত্যছবি। সারল্য আর সাবলীলতার ঐশ্বর্য এভাবেই বাঙালি শিশুমনের আকাশ ঘিরে ছিল। কিন্তু কয়েক দশকের ব্যবধানে চিত্রটা অনেকখানি বদলে গেছে। আজকের শৈশব হয়ে গিয়েছে যান্ত্রিক। ছোটো থেকেই হাতে মুঠোফোন, পিঠে ব্যাগ নিয়ে প্রতিযোগিতার দৌড়ে সামিল বাংলার শৈশব। সেকাল আর একাল — মাঝের ব্যবধান মাত্র কয়েকটা দশক। কিন্তু পরিবর্তনটা অনেকখানি। এই সময়ের পরিবর্তনটাকেই এবার তুলে ধরছে গ্রামীণ হাওড়ার বাগনান-১ ব্লকের হারোপ জাতীয় পাঠাগার ও হারোপ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। এবার তাদের পুজো ৮০ বছরে পদার্পণ করল। আশি বছরে তাদের ভাবনা,”আটের স্বপ্ন আশিতে, নারায়ণের হাত ধরে আমরা এবার ছেলেবেলাতে”। বাঙালির সেকাল ও একালের শৈশবকে তুলে ধরতে এবার উদ্যোক্তারা বেছে নিয়েছেন প্রবাদপ্রতিম স্রষ্টা নারায়ণ নারায়ণ দেবনাথের সৃষ্টিকে। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
উদ্যোক্তাদের কথায়, নারায়ণ দেবনাথ বাঙালির ছেলেবেলার একান্ত অপ্রতিদ্বন্দ্বী সাহিত্যিক। তাঁর সৃষ্টিগুলি মন দিয়ে দেখলে বোঝা যায় প্রবহমান বাঙালি জীবনের ছোট ছোট অনুভূতি, অভিজ্ঞতা, দৃশ্যকল্প ঢুকে পড়েছে তাতে। সেই ভাবনাকেই এবার তুলে ধরছে হারোপ জাতীয় পাঠাগার। শিল্পী উত্তম খেটুয়ার তত্ত্বাবধানে ইতিমধ্যেই মন্ডপ সজ্জার কাজ শুরু হয়ে গেছে। জোরকদমে ভাবনা বাস্তবায়নের কাজ চলছে। বাঁশের পাশাপাশি মন্ডপ সজ্জায় মাটি, বিভিন্ন পরিবেশবান্ধব রঙ ও সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। মন্ডপে থাকবে বাঁটুল, হাঁদাভোদার মতো নারায়ণ দেবনাথের সৃষ্ট বিভিন্ন চরিত্র। পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা সমরেশ মজুমদার জানান, মন্ডপের একদিকে তুলে ধরা হবে সেকালের শৈশব আর অন্যদিকে তুলে ধরা হবে একালের শৈশবকে। প্রতিমাতেও থাকবে সেকেলে ছাপ। সেকালই যে ভালো ছিল সেটাই প্রতিমায় তুলে ধরছেল শিল্পী জগদীশ পাল। পুজো কমিটির সভাপতি সুবীর ঘোষাল জানান, এবার এই পুজোর বাজেট প্রায় ২.৫-৩ লক্ষ টাকা। বিগত বছরের মতো এবারও পুজোর আনন্দকে সকলের সাথে ভাগ করে নিতে তাদের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রান্তিক শিশুদের নতুন জামা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।