নিজস্ব সংবাদদাতা : রাস্তাজুড়ে কাগজ আর সুপারি পাতার তোরণ। রাস্তার উপর কোথাও লেখা “যুদ্ধে জীবন না হারিয়ে/জীবন যুদ্ধে জয়ী হও”, বা “কাগজ কেটে নৌকা বানাও, মানুষ কেটে হিংসে নয়”। আবার কোথাও আঁকা শান্তির বাণী নিয়ে উড়ে চলা একটি সাদা পায়রা, সাথে বার্তা ”Make Art, Not War”। যে হাতগুলো শীতের কনকনে ঠান্ডায় অসহায়-আর্ত-পীড়িত মানুষের গায়ে কম্বল তুলে দেয়, যে ছেলেগুলো কোভিডের চূড়ান্ত মুহুর্তে রাত কিমবা দিন উপেক্ষা করে কোভিড আক্রান্ত মুমূর্ষু রোগীর দ্বারে অক্সিজেন কিমবা খাবার পৌঁছে দেয়, কিমবা যাঁরা আম্ফান, ইয়াস বিধ্বস্ত মানুষের পাশে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁরাই তুলির টানে কোথাও লিখেছে “যুদ্ধে জীবন না হারিয়ে/জীবন যুদ্ধে জয়ী হও”, বা “কাগজ কেটে নৌকা বানাও, মানুষ কেটে হিংসে নয়”। লড়াকু মেধাবী পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ানো ছেলেগুলোই আজ শান্তির বাণী দিয়ে পায়রা এঁকেছে। বিশ্বজুড়ে যখন যুদ্ধের দামামা, বোমা-বারুদ-মিসাইলের দামামা, তখন এভাবেই সৃজনশীল ভাবনায় শান্তির বার্তা দিল আমতার উদং গ্রাম জুড়ে। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
গ্রামীণ হাওড়ার আমতা-১ ব্লকের উদং কালীমাতা আশ্রম প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল ‘গ্রামীণ হাওড়া অঙ্কন ও শিল্পকলা উৎসব’। দামোদরের তীরে ঝাউবনের ছায়ায় রবিবার বসেছিল শিল্পমেলা। মেদিনীপুরের পটশিল্পী, উলুবেড়িয়ার ককশিল্পী, কোলকাতার পোট্রের্ট শিল্পী, মৃৎশিল্পী, বাঁশের কাজের শিল্পী, ক্যারিকেচার শিল্পী সহ বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের বহু শিল্পী তাঁদের শিল্পকর্মের ডালি সাজিয়ে হাজির হয়েছিলেন ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর এই শিল্পমেলায়। তিনটি বিভাগে অঙ্কন প্রতিযোগিতার পাশাপাশি ছিল হস্তশিল্প প্রতিযোগিতা ও কনে সাজানো প্রতিযোগিতা। সবমিলিয়ে বিভিন্ন বিভাগে অংশ নেন প্রায় তিনশো জন প্রতিযোগী। গ্রাম বাংলার বুকে অভিনব এই কনে সাজানো প্রতিযোগিতা দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন বহু মানুষ। বিভিন্ন জেলা থেকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন ২৭ প্রতিযোগী। নিজেরাই মডেল এনেছিলেন। দীর্ঘ প্রায় চার ঘন্টা ধরে সাজানোর পর অনুষ্ঠিত হয় র্যাম্প শো। সংগঠনটির কর্তা তাপস পাল জানান, শিক্ষায় স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে সংগঠনের পথচলা। বছরভর বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি প্রতিবছর তাঁরা এই শিল্পমেলার আয়োজন করেন। তিনি বলেন, বাংলার মাটি শিল্প, সংস্কৃতির পুণ্যঘাঁটি। কিন্তু কালের নিয়মে বাংলার বুক থেকে ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলার গর্ব বিভিন্ন হস্তশিল্প। নতুন প্রজন্ম ফোন, আর সোশ্যাল মিডিয়ায় মগ্ন হয়ে পড়ছে। নতুন প্রজন্মের কাছে বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পগুলিকে তুলে ধরতেই এই শিল্পমেলার আয়োজন। এই শিল্পমেলাকে ঘিরে মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।