নিজস্ব সংবাদদাতা : উলুবেড়িয়ার কাঠিলার পি ডব্লিউ ডি ফোরাম অফ আশাভবন সেন্টারের পূজো এই বছরে সপ্তম বর্ষে পদার্পণ করলো। সাত বছর আগে দিবাঙ্গদের পূজোর আনন্দে সামিল করার লক্ষ্যে শুরু হয়েছিল এই পূজো। এই বছরে তাদের থিম শিশু সুরক্ষা। এই পুজোর উদ্যোক্তারা সকলেই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন। কেউ সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত তো কেউ পালস পোলিওতে আক্রান্ত। কেউবা মুক ও বধির। অনেককেই হাঁটা চলার জন্য হুইলচেয়ারের সাহায্য নিতে হয়। পূজোর থিম কে সম্পূর্ণ রূপ দিতে দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছেন তারা। সেখানে পৌঁছে দেখা গেলো পালস পোলিওতে আক্রান্ত থিম মেকার মন্টু মন্ডলের তত্বাবধানে মন্ডপ তৈরীর কাজে ব্যস্ত পুতুল, সাহিদা, ফারুক, বাসন্তী, সম্পারা।
মাটির হাঁড়িতে ভেষজ রঙ লাগিয়ে ও বিভিন্ন রঙের রঙিন কাগজ দিয়ে দিয়ে চলছে মন্ডপের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। পুজোর সম্পাদিকা ৯০ শতাংশ সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত পুতুল মাইতি হুইলচেয়ারে বসে বলেন আমাদের হোমের আবাসিকরা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হওয়ার কারণে বাইরের মন্ডপে গিয়ে পুজো দেখতে পারতোনা। কারন বাইরের বেশীরভাগ পূজোয় র্যাম্পের ব্যবস্থা থাকেনা। তার মধ্যে প্রচন্ড ভীড়ে হুইলচেয়ারে বসে প্রতিমা দর্শন করা সম্ভব হতনা। তখন থেকেই আমরা পরিকল্পনা করি নিজেরা একটা পুজো করবো। এবং সেই পুজো হবে সম্পূর্ণভাবে ব্যারিয়ার ফ্রী। যাতে করে যারা আমাদের মতো বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশু বা ব্যক্তি, তারাও সমানভাবে পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে পারে। সেই থেকেই পি ডব্লিউ ডি ফোরাম অফ আশাভবন সেন্টারের পূজো শুরু হয়।
পূজো কমিটির এক সদস্যা সাহিদা খাতুন বলেন আমাদের মধ্যে কোনো ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই। কারণ আমাদের লড়াইটা জীবনের লড়াই। এখানে যেমন দুর্গাপূজা সহ বিভিন্ন পুজো হয় ঠিক সেইভাবেই ইদ বা বড়দিন পালন করা হয়। পুজোর কয়েকটা দিন নাচ, গান, খাওয়া দাওয়া, হইহুল্লোর করে কেটে যায়। আশা ভবন সেন্টারের ডিরেক্টর জন মেরী বারুই বলেন আমাদের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মেয়েরা ও আমাদের হোমের পুরানো আবাসিক (যারা এখান থেকে বেরিয়ে এখন এখানেই কাজ করে) তারাই পূজোর মুল উদ্যোক্তা। আমাদের হোমের সমস্ত কর্মচারীরা তাদের একদিনের পারিশ্রমিক দেয় চাঁদা হিসাবে। পাশাপাশি স্থানীয় কিছু মানুষ এবং সরকারি কয়েকটা দফতরের অনুদানে এই পূজো হয়। আমাদের লক্ষ সমাজের সকল স্তরের মানুষকে পূজোর আনন্দে সামিল করা।