নিজস্ব সংবাদদাতা : ভোরের আলো ফোঁটার আগেই স্থানীয় উদ্যোমী যুবকরা ব্যাগ হাতে পৌঁছে যাচ্ছে মাছের আড়তে। আবার কেউ পৌঁছে যাচ্ছে সব্জি বাজারে। মাছ, কাঁচা সব্জি কিনে এনেই সকাল থেকে শুরু হচ্ছে রান্না। নাহ, এ কোনো বিয়েবাড়ি বা অন্নপ্রাশন বাড়ির চিত্র নয়।
করোনার জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ায় রোজই চলছে এই সুবৃহৎ কর্মকান্ড। বিশিষ্ট সমাজসেবী দুলাল করের নেতৃত্বে কুলগাছিয়া সুপার মার্কেট এলাকার যুবক সংঘ নামক একটি সংগঠনের সদস্যরা লকডাউনে প্রায় দীর্ঘ প্রায় একমাস ধরে কুলগাছিয়া স্টেশন রোড, প্ল্যাটফর্ম চত্বরে আশ্রয় নেওয়া ভবঘুরেদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
তাঁরা প্রতিদিন প্রায় ৬০-৭০ জন অসহায় মানুষের জন্য মধ্যাহ্নভোজনের ব্যবস্থা করছেন। ভাত, ডাল, তরকারির পাশাপাশি নিয়মিত পাতে পড়ছে ডিম, মাছ। শুধু ভবঘুরেরাই নন, মধ্যাহ্নভোজনের আসরে আসছেন কুলগাছিয়া ও পাশ্ববর্তী এলাকায় আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা।
কুলগাছিয়া স্টেশনে আশ্রয় নেওয়া বিশেষভাবে সক্ষম বেশ কয়েকজন মানুষ সুপারমার্কেট এলাকায় আসতে না পারায় দুপুর হলেই তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে খাবার। পাশাপাশি, এলাকার গর্ভবতী দুঃস্থ মহিলাদের বাড়িতে সংগঠনের সদস্যরা নিয়মিত পৌঁছে দিচ্ছেন সোয়াবিন, ডিমের মতো বিভিন্ন প্রোটিনজাতীয় খাদ্য।
এই কর্মযজ্ঞের উদ্যোক্তা দুলাল করের কথায়, “লকডাউনের প্রথম দু-একদিন দু’একটি ক্লাব সংগঠন কুলগাছিয়া স্টেশনে এসে খাবার দিয়ে ছবি তুলে নিয়ে চলে যায়। অথচ স্টেশনে আশ্রয় নেওয়া মানুষগুলোর অভুক্তই রয়ে যান। যা সত্যিই আমাদের কাছে ব্যাথা দেয়। তাই আমরা নিজেরাই তাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিই। গত ১৫ ই এপ্রিল থেকে নিয়মিত এই উদ্যোগ চলছে।
ভবঘুরে, অসহায় মানুষ ছাড়াও এলাকায় আটকে থাকা পরিযায়ী শ্রমিকরা আসছেন। স্থানীয় গর্ভবতী মা’য়েদের প্রোটিনযুক্ত খাবার ও শিশুদের জন্য দুধের বন্দোবস্তও করা হয়েছে।” দুলাল বাবু আরও জানান, “যতদিন লকডাউন চলবে ততদিন এই প্রয়াস জারি থাকবে।” দুলাল জ্যেঠুর নেতৃত্বে যুবক সংঘের যুব সদস্যদের এহেন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন এলাকার বহু মানুষ।