নিজস্ব সংবাদদাতা : ট্রেনে যাবার পথে জানালায় চোখ রাখলেই দু’ধারের ঝিলে বা জলাশয়ে পদ্মের দেখা মেলে। বাংলার গ্রামের পুকুরে বা ঝিলে পদ্মের উপস্থিতি খুবই পরিচিত বিষয়। তবে এবার জলে নয়, স্থলেই বিঘার পর বিঘা জমিতে চাষ হচ্ছে পদ্ম। আর তাতেই দেদার মুনাফার মুখ দেখছেন চাষিরা। এতেই আশায় বুক বেঁধেছেন বাগনানের শতাধিক পদ্ম চাষি। জানা গেছে, গ্রামীণ হাওড়ার বাগনান-১ ব্লকের দুর্লভপুর ও রাস্তি গ্রামে প্রায় একশো বিঘা জমিতে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পদ্মফুলের চাষ করছেন চাষিরা। যে জমিতে এক সময় ধান ফলিয়েছেন চাষিরা, এখন সেই জমিতেই পদ্ম ফোটাচ্ছেন তারা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের অধীনে ডিপিএমইউ হাওড়া অফিসের উদ্যোগে আদমি প্রকল্পের মাধ্যমে বাগনানের দু’ই গ্রামে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে পদ্মফুল চাষের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে বাগনান-১ ব্লকের দুর্লভপুর ও রাস্তি গ্রামের ১১০ জন চাষিকে নিয়ে প্রায় একশো বিঘা জমিতে পদ্মের চাষ করা হচ্ছে। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
জানা গেছে, জমিতে পদ্ম চাষের ক্ষেত্রে জৈব পদ্ধতির উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথমে জমির মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী মাটি শোধন করে মাটিতে জৈব সার দেওয়া হয়। পাশাপাশি, প্রয়োজন মোতাবেক মাটিতে অনুখাদ্যও মেশানো হয়। পদ্মের চারা জৈব কীটনাশক দিয়ে শোধন করে জমিতে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে তা লাগানো হয়। আইপিএম পদ্ধতিতে পোকা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এই পদ্ধতিতে আশার আলো দেখছেন চাষিরা। চাষিরা জানিয়েছেন, এই পদ্ধতিতে পদ্মগাছ থেকে ভালো গুণগত মানের ফুল আসছে। দুর্লভপুর এলাকার অসিত পোড়ে দীর্ঘদিন ধরে নিজের জমিতে ধানচাষ করতেন। তবে এবার ধান চাষের বদলে তিনি তিন বিঘা জমিতে পদ্মের চাষ করেছেন। অসিত বাবুর কথায়,”ধানচাষের চেয়ে অনেক বেশি লাভ হচ্ছে। চারা বসানোর দেড়-দু’মাসের মধ্যে গাছে ফুল আসছে।” তিনি জানান, বর্তমানে এক-একটি ফুল চার-পাঁচ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দুর্গাপুজোর মরসুমে এক-একটি পদ্মফুলের দাম কুড়ি টাকা অব্ধি উঠেছিল। জমিতে পদ্মচাষে মুনাফা মেলায় এই অভিনব চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন এলাকার চাষিরা। আর তাতেই বাড়ছে আশার আলো।