নিজস্ব সংবাদদাতা : ২০২১ সালের রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন সম্পুর্ণ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানালেন রাজ্যের রাজ্যপাল জয়দীপ ধনকড়। মঙ্গলবার দুপুরে উলুবেড়িয়ার বাউড়িয়ার চেঙ্গাইল হাইস্কুলের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এই কথা জানান।
তিনি বলেন পশ্চিমবঙ্গের নাম যখন হিংসার সাথে যুক্ত হয়, তখন আমার খুব খারাপ লাগে। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে আমি চিন্তিত। আমি বারবার বলেছি যে, শেষ লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদনাম হয়েছে। প্রতিটি দফায় হিংসা হয়েছে।
আমি চাই পশ্চিমবঙ্গে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। আমি চাই পশ্চিমবঙ্গ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের দিক থেকে দেশের মধ্যে মডেল রাজ্য হয়ে উঠুক। আমি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কে অভিনন্দন জানাই। শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য। গোটা ভারতবর্ষের কাছে এটা দৃষ্টান্তমূলক।
আমি নির্বাচন কমিশনকে বলেছি যে আমি ময়নাতদন্তে বিশ্বাস করিনা। বিশ্বাস করি আগাম সতর্কতামূলক ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপে। কমিশনারের সাথে আমার দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। আমি ওনাকে বলেছি ২০১৩ এবং ২০১৮ ভোট সমস্যাযুক্ত ছিল। সেখানে গনতন্ত্রের সাথে আপোষ করা হয়েছে। সেখানে অনেক হিংসা হয়েছে। এখন থেকে সতর্ক থাকতে হবে।
একটি রূপরেখা তৈরি করতে হবে, যাতে করে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা যায়। আমি বিশ্বাস করি তা হবে। ২০২১ সালের বিধানসভার ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে যা যা করার তাই করবেন বলে তিনি রাজ্যবাসীকে আশ্বাস দেন। তিনি আরও বলেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে দেশের সংবিধান রক্ষায় আমি দায়বদ্ধ। আমি আপনাদের বলছি এবারের নির্বাচনে বড় পরিবর্তন দেখা যাবে।
রাজ্যে হতে চলা পুরসভার ভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন পুরসভা ভোট নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সাথে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। কমিশন এবং সরকার, কেউ কারো কাজে হস্তক্ষেপ না করে একসাথে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছি। দেশে ঘটে চলা হিংসা সম্পর্কে তিনি বলেন হিংসা সব সময়ই গনতন্ত্র বিরোধী, মানবতা বিরোধী ও সংবিধান বিরোধী। রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন রাজ্যে বাড়তে থাকা হিংসা নিয়ে তিনি চিন্তিত।
তিনি আরো বলেন হিংসা হিংসাই। তাকে আলাদা করে চিহ্নিত করা যায়না। সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে হিংসা হয়েছে। সেটা নিয়ে আমি মর্মাহত। হিংসা গনতন্ত্র ও দেশকে ধ্বংস করে বলেও তিনি জানান। পাশাপাশি এদিন তিনি পুলওয়ামায় বীরগতি প্রাপ্ত জওয়ান বাবলু সাঁতারার বাড়িতে যান। সেখানে বীরগতি প্রাপ্ত জওয়ানদের পরিবারকে সমবেদনা জানান এবং বীরগতি প্রাপ্ত জওয়ানের ছবিতে মাল্যদান করেন।
পাশাপাশি বীরগতি প্রাপ্ত জওয়ানের পরিবারের হাতে নিজস্ব তহবিল থেকে ৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। বীরগতি প্রাপ্ত জওয়ান বাবলু সাঁতারার স্ত্রী মিতা সাঁতরা বলেন রাজ্যপাল যে কোন সমস্যায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন আমি চাইবো যাতে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান সব সময় অন্যান্য বীরগতি প্রাপ্ত জওয়ানের পরিবারের পাশে থাকেন।
আমি চাইব ভবিষ্যতে যুবসমাজ এবং আগামী প্রজন্ম যেন সিআরপিএফ এ যোগদান করে। এদিন রাজ্যপাল চেঙ্গাইল হাইস্কুলে একটি স্যানেটারী ন্যাপকিন মেশিনেরও উদ্ভাবন করেন। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপালের স্ত্রী সুদেশ ধনকড়, সিআরপিএফের স্পেশাল ডিজি সেন্ট্রাল জোন কুলদীপ সিং, ডিআইজি সীমা ধুন্ধিয়া, স্থানীয় কাউন্সিলর অতিরঞ্জন অধিকারী প্রমুখ।