বিশেষ প্রতিবেদক : গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের হাটগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়বেড়িয়া গ্রাম। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ কৃষি ও কুটীরশিল্পের উপর নির্ভর করে জীবনযাপন করেন। তবে চাকুরি ও প্রবাসীর সংখ্যাও যে নেই তা নয়। তবে ভোর হলেই শাঁখ আর আজানের পরেই গ্রামে ভেসে ওঠে সমবেত সুর—”চল কোদাল চালাই /হবে শরীর ঝালাই।”
ভারতীয় সংস্কৃতির অন্যতম ব্রতচারী। গুরুসদয় দত্তের এই শৈলী একটা সময়ে স্কুলেও নিয়মিত শেখানো হত। ব্রতচারী শৈলীর মুল উদ্দেশ্য হল গান ও তাদের সঙ্গে শরীর চর্চা এবং চরিত্র গঠন। কিন্তু দিন যত এগিয়েছে তত ই ব্রাত্য হয়ে গিয়েছে ব্রতচারী নৃত্য। অথচ গ্রামের মানুষ খুব সহজে গানের তালে তালে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করার সুযোগ পেত। তবু এর মধ্যে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছে বাড়বেড়িয়া গ্রামের একদল নবীন প্রজন্ম। আজো সকাল হলেই নিয়মিত ভেসে ওঠে” চল কোদাল চালাই”।
সকাল হলেই এক প্রস্থ রেওয়াজ সেরে তারপর দৈনন্দিন কাজ শুরু করে। অনেকে ‘রনপা’ অভ্যাসও করে। অনেকে আবার শেখে না কাড়া বাজানো। বলা ভালো লুপ্ত প্রায় লোক ক্রীড়া ও লোক শিল্পকলাকে এই জেট যুগে তুলে ধরার অসম লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এই যুবকরা। সেই উদ্দেশ্যকে জনমানসে তুলে ধরতে ফি বছর বাড়বেড়িয়া ব্রতচারী ধাম আয়োজন করে ব্রতচারী মেলার। গত শনিবার থেকে হয়েছে সেই মেলা।
এ বছর কোভিড পরিস্থিতির জন্য মেলা ছোট করে দেওয়া হয়েছে বলে জানান ব্রতচারী ধামের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক রনজিৎ পাল। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসেন ব্রতচারী শিল্পীরা। হাওড়ার এই ব্রতচারী শিল্প ইতিমধ্যেই সুনাম কুড়িয়েছে বিদেশের বুকেও। তবু ‘লড়াই চলছে’ বলে অকপটে জানান রনজিৎ বাবু।”
এখন স্মার্টফোন আশক্তি থেকে নবীনদের সরিয়ে আনাই মূল লড়াই” বলে জানান রনজিৎ বাবু। ইতিমধ্যে সেজে উঠেছে মেলা চত্বর।