নিজস্ব সংবাদদাতা : আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বাংলাজুড়ে ‘পরিবর্তন যাত্রা’র ডাক দিয়েছে বিজেপি। ইতিমধ্যেই এরাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জেপি নাড্ডা, অমিত শাহদের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের উপস্থিতিতে ‘পরিবর্তন যাত্রা’র সূচনা হয়েছে। শনিবার থেকে গ্রামীণ হাওড়ায় বিজেপির ‘পরিবর্তন যাত্রা’ শুরু হয়েছে। চলবে সোমবার অব্ধি।
জানা গেছে, শনিবার দুপুর নাগাদ কোলাঘাট হয়ে গ্রামীণ হাওড়ায় বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার বিশেষ ট্যাবেলো (পড়ুন রথ) প্রবেশ করে। দেউলটি, ঘোড়াঘাটা, বাগনান, নুন্টিয়া, শ্যামপুর হয়ে শনিবার রাতে ৫৮ গেটে পৌঁছায় পরিবর্তন যাত্রার রথ। শনিবার কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী, হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপির সভাপতি প্রত্যুষ মন্ডল, রাজ্যনেতা অনুপম মল্লিক সহ অন্যান্যরা।
রবিবার সকালে ফের ৫৮ গেট থেকে শুরু হয় ‘পরিবর্তন যাত্রা’। উলুবেড়িয়া দক্ষিণ বিধানসভা হয়ে উলুবেড়িয়া শহরে প্রবেশ করে গেরুয়া শিবিরের এই বর্ণাঢ্য রথ। উলুবেড়িয়া শহর থেকে রথে চড়েন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। উপস্থিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশবপ্রসাদ মৌর্য, সাংসদ খগেন মূর্মু, হাওড়া গ্রামীণ জেলার সভাপতি প্রত্যুষ মন্ডল সহ অন্যান্যরা।
উলুবেড়িয়ার গঙ্গারামপুর, মনসাতলা হয়ে খলিশানী পৌঁছায় এই বিশেষ ট্যাবলো। সেখান থেকে পানপুর মোড়, শিবেরহানা, ১০ নং পুল, আমতা কলাতলা, সেহাগড়ী হয়ে রবিবার সন্ধ্যায় আমতা বিধানসভার জয়পুরে পৌঁছায় রথ। সোমবার সকালে জয়পুর থেকে উদয়নারায়ণপুর, পেঁড়ো হয়ে গ্রামীণ হাওড়ায় বিজেপির পরিবর্তন যাত্রার সমাপ্তি ঘটবে বলে জানা গেছে। বিজেপির এই পরিবর্তন যাত্রাকে ঘিরে মানুষের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো।
বাগনান, শ্যামপুর, উলুবেড়িয়া, আমতা সব জায়গাতেই মহিলারা শঙখ, উলুধ্বনি, গাঁদার পাপড়িতে রথকে স্বাগত জানান। রথে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে কখনো বা হেঁসে পথচলতি সাধারণ মানুষের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারীরা। পরিবর্তন যাত্রাকে স্বাগত জানাতে বিজেপি কর্মীদের পক্ষ থেকে গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় পথসভার আয়োজন করা হয়। রবিবার সন্ধ্যায় এমনই এক পথসভা থেকে আমতার সেহাগড়ীতে বিজেপিতে যোগদেন বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক।
তাদের হাতে বিজেপির দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির জেলা সভাপতি প্রত্যুষ মন্ডল, সাংসদ খগেন মূর্মুরা। এদিকে হাওড়া গ্রামীণে ‘পরিবর্তন যাত্রা’য় এসে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে ছাড়েননি দিলীপ, শুভেন্দুরা।
এদিন উলুবেড়িয়ায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “বাংলায় সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে পুলিশ ও সরকার। তাই মানুষ কেন্দ্রীয় বাহিনীকেই চাইছে।” তিনি আরও বলেন,”ভোট লুঠ করতে পারবেনা বলে ব্রাত্য বসু চিন্তা করছেন। ভাঙরে কেউ ভোট দিতে পারেনি। এবার আর তা হবেনা।”
অন্যদিকে, শনিবারে বাগনানে শুভেন্দু অধিকারী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে বলেন,”ওকে প্রথম উত্তর দিতে হবে ম্যাডাম নারোলাটা কে? ব্যাংককে যে কয়লার টাকা জমা পড়ছে সেটা কে দিচ্ছে? বিনয় মিশ্র কোথায়? এগুলো আগে বলতে হবে। আমি প্রশ্ন করছি। পায়ে কাঁটা ফুটেছে তাই লাফাচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ দিয়ে লোক জমা করে। ওটা কোনো ভীড় নয়। সেটা ভোটে প্রমাণ হয়ে যাবে।” তিনি বলেন,”কে চোর তা নির্বাচনে প্রমাণ হয়ে যাবে। চোরেদের আটকানোর জন্য আমার হাতটা ধরেছিল কেন। হ্যাবলার বাড়িতে আমার হাত-পা ধরে ছিল তো আমাকে আটকানোর জন্য।”
বিজেপির পরিবর্তন যাত্রা উপলক্ষ্যে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের তরফে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। জেলার বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।