নিজস্ব সংবাদদাতা : এ কাহিনী রূপকথার কাহিনীকেও যেন হার মানাবে। মাটির দেওয়ালের বাড়িতে টিনের ছাদ। সংসার জুড়ে অভাব অনটনের ছাপ। মাটির দেওয়ালের পেরেকে টাঙানো রয়েছে অজস্র পদক, স্মারক। সেই একচিলতে বাড়ি থেকে ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম— দূরত্বটা কয়েক হাজার কিলোমিটার। সেই বার্মিংহামের মাটিতে দাঁড়িয়েই দেশমাতৃকার জয়ধ্বজা ওড়ালেন গ্রামীণ হাওড়ার পাঁচলার দেউলপুরের যুবক অচিন্ত্য শিউলি। বার্মিংহাম কমনওয়েলথে দেশের হয়ে পুরুষদের ৭৩ কেজি বিভাগে ভারোত্তোলনে স্বর্ণ পদক জয়লাভ করলেন বছর কুড়ির অচিন্ত্য। মোট ৩১৩ কেজি(১৪৩+১৭০) ভার উত্তোলন করে সোনা জিতলেম অচিন্ত্য। ছোটো থেকেই অভাবের সংসারে বড়ো হয়ে ওঠা। তার মাঝেই ২০১৩ সালে বাবাকে হারান অচিন্ত্য। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন...
একদিকে পারিবারিক আর্থিক অস্বচ্ছলতা, অন্যদিকে বাবাকে হারানোর বেদনা, তার মাঝেই নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যান অচিন্ত্য। মা কোনোরকমে জরির কাজ করে সংসার চালান। তাও নিয়মিত কাজ জোটেনা। তার মাঝেই নিজের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলে অচিন্ত্য। ছেলের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে চোখের কোণ চিকচিক করে ওঠে অচিন্ত্যর মা পূর্ণিমা শিউলির। পূর্ণিমা শিউলি জানান, এ জয় সকলের জয়। এই সাফল্যে আমরা সকলে গর্বিত। তিনি জানান, খুব কষ্ট করে ছেলেকে মানুষ করেছি। ওর সাফল্য সব দুঃখ-কষ্টকে ভুলিয়ে দিচ্ছে। জানা গেছে, স্থানীয় এলাকাতেই প্রশিক্ষক অষ্টম দাসের কাছে ২০১১ সাল নাগাদ ভারোত্তোলনে হাতেখড়ি। অষ্টম দাসের তত্ত্বাবধানেই চার বছর চলে অনুশীলন। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে মেলে একের পর এক সাফল্য। অচিন্ত্যর দাদা অলোক শিউলি জানান, ভাইয়ের সাথে কথা হয়েছে। তিনি জানান, সামনেই এশিয়ান গেমস ও অলিম্পিকই ভাইয়ের এখন পাখির চোখ। তাদের বিশ্বাস, আগামীতেও এভাবেই দেশ ও বাংলার নাম বিশ্বের দ্বারে উজ্জ্বল করবে তাদের সকলের প্রিয় অচিন্ত্য।