নিজস্ব সংবাদদাতা : বিমল, মানস, শুভঙ্কর, সায়ন, রাজকুমার – ওদের কেউ এখনো পড়ুয়া আবার কেউ সদ্য কলেজের গন্ডি পার করে পা দিয়েছে কর্মজীবনে। করোনা নিয়ে যখন ত্রাহিত্রাহি রব তখনই গ্রামীণ হাওড়ার এই সমস্ত যুবকরা নিজেদের সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। কখনো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরি, আবার কখনো বা স্থানীয় বাজারে সুরক্ষারেখা তৈরি করে নিয়মিত সচেতনতার প্রচার চালিয়ে যাওয়া, আবার বা মুমূর্ষু থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য রক্তের বন্দোবস্ত করা ।
এভাবেই করোনা মোকাবিলায় সামিল হয়েছেন গ্রামীণ হাওড়ার আমতার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর সদস্যরা। এবার তারা আমতা -১ ব্লকের বেশ কিছু প্রান্তিক পড়ুয়ার পরিবারের পাশে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিয়ে এগিয়ে এল। সংস্থাটির সম্পাদক তাপস পাল জানান, শিক্ষায় স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যেই মূলত আমাদের পথচলা। আমরা গ্রামীণ হাওড়ার বেশ কিছু প্রান্তিক পড়ুয়ার পড়াশোনার সমস্ত ব্যয়ভার বহন করি। ওদের প্রায় প্রত্যেকেই দিন আনা দিন খাওয়ার পরিবারের সদস্য।
লকডাউনের জেরে কার্যত কাজ হারিয়ে একমুঠো অন্নের আশায় রয়েছে এই সমস্ত পরিবারগুলি। এরকমই প্রায় ৪০ জন পড়ুয়ার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হল চাল, ডাল, আলু, সোয়াবিন, বিস্কুট সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। মূলত, সংস্থার সদস্যরাই চাঁদা তুলে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। তাঁরা পড়ুয়াদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিবারের হাতে এই সমস্ত সামগ্রী তুলে দেয়। এর পাশাপাশি, তাদেরকে সংস্থার তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্কও তুলে দেওয়া হয়।
সংকটময় মুহুর্তে দাঁড়িয়ে দাদাদের সাহায্য পেয়ে স্বভাবতই খুশি শিমুল, পূর্ণিমা, শিউলি, কৃষ্ণেন্দুর মতো অভাবী পড়ুয়ার পরিবার। এঁদের মতো সমাজসচেতন মানুষের হাত ধরেই বিপর্যয়ে ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম অসহায় পরিবারগুলি। দেশের এই কঠিন পরিস্থিতে গ্রামীণ হাওড়ার এই উদ্যোমী যুবকরা যেন আড়ালে থাকা হিরো। খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি শেখালেন সামাজিক দূরত্ব তৈরির পাঠও, যা আজ সমাজে বড়ো সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।