নিজস্ব সংবাদদাতা : ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে দেশজুড়ে লকডাউনের মেয়াদ ১৪ দিন বৃদ্ধি করা হয়েছে। দীর্ঘ লকডাউনের জেরে নিম্ন মধ্যবিত্তের হেঁশেলে টান পড়েছে। বহু মানুষই কার্যত আধপেটা অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। পাশাপাশি, দীর্ঘদিন রক্তদান শিবির অনুষ্ঠিত না হওয়ায় বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিতেও রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। একফোঁটা রক্তের জন্য মুমূর্ষু রোগীর পরিবার এক ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে আরেক ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তারপরও বহুক্ষেত্রে মিলছে না একফোঁটা রক্ত। রাজ্যের বিভিন্ন জেলার মতোই একই সমস্যা গ্রামীণ হাওড়াতেও। এই সংকটময় পরিস্থিতিতে রক্তের চাহিদা পূরণে এগিয়ে এসেছে গ্রামীণ হাওড়ার একদল উদ্যোমী যুবক। জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রাক্কালে শাশ্বত পাড়ুই নামের জনৈক ব্যক্তির উদ্যোগে তৈরি করা হয় একটি ব্ল্যাড ডোনার হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। তাঁর উদ্যোগে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেন রেজাউল, শাহজাহানদের মতো যুবকরা।
গ্রুপের অন্যতম সদস্য অর্পণ দাসের কথায়, “মানুষ হিসাবে এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লক্ষ্যেই আমাদের এই উদ্যোগ।” অর্পণ জানান, “বর্তমানে এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ১৩২। বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তের প্রয়োজন হলেই সংশ্লিষ্ট হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের সদস্যরা এগিয়ে যাচ্ছেন রক্তদান করতে। কখনো তাঁরা দাঁড়াচ্ছেন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত অসহায় শিশু সুমন মন্ডলের পাশে আবার কখনও বা মুমূর্ষু প্রৌঢ় কিমবা বৃদ্ধার পাশে।” এভাবেই জীবসেবার ব্রতে দীক্ষিত হয়ে রাতদিন লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন শ্যামপুর, বাগনান, উলুবেড়িয়া, আমতা সহ গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন জায়গার বেশ কিছু মানুষ। তবে বেশ কিছু ক্ষেত্রে এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও মিলছে না সংশ্লিষ্ট ব্লাডগ্রুপের রক্তদাতা। সেক্ষেত্রে গ্রুপের সদস্যরাই উদ্যোগী হয়ে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের মধ্য দিয়ে রক্তদাতার খোঁজ চালাচ্ছেন। তাঁদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসছেন রক্তদাতারা। এভাবেই গ্রামীণ হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে রক্তের বন্ধন গড়ে তোলার মাধ্যমে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন বিভিন্ন গ্রামের একদল লড়াকু তরুণ।