বিশেষ প্রতিবেদক : সকাল হলেই সাইকেলে চেপে বেড়িয়ে পড়েন। সাথে নেন ছোটো একটি ব্যাগ। ব্যাগে রয়েছে স্টেথোস্কোপ, প্রেসার মাপার যন্ত্র, প্যারাসিটামল, ওআরএস সহ বিভিন্ন সামগ্রী। না কোনো পেশা নয়, নেশার টানেই দিনের পর দিন প্রত্যেন্ত গ্রামাঞ্চলে ছুটে বেড়ান বাগনানের পঞ্চাশোর্ধ্ব শিক্ষক মধুসূদন বাগ। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক।
কিন্তু নেশা তার চিকিৎসা। আর সেই টানেই মানকুর, বাক্সী সহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পৌঁছে যান। বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি উপযুক্ত পরামর্শ দেন মধুবাবু। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যখন দেশজুড়ে আছড়ে পড়েছে তখনও নিজের এই নেশায় অটুট মধুবাবু। জানা গেছে, হাওড়ার মানকুরে ঝাড়গ্রামের মল্লরাজাদের স্মৃতি বিজড়িত একটি ইটভাটা সহ রূপনারায়ণ নদের ধারে বেশ কয়েকটি ভাটা রয়েছে।
ওই সব এলাকায় ঝাড়গ্রাম, বিহার সহ পাশ্ববর্তী বেশ কয়েকটি রাজ্য থেকে যেমন শ্রমিকরা কাজ করতে আসেন তেমনি রয়েছেন স্থানীয় কিছু শ্রমিক। সারা দিন ধরে বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে শ্রমিকদের মধ্যে যেমন করোনা নিয়ে সচেতন করেন তেমনই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা দেন মধুসূদন বাগ।
ধুসূদন বাবু জানান, “ওরা দিন আনে দিন খায়। শরীরের দিকে ওদের তাকালে চলে না। অথচ ওদের শরীর সুস্থ থাকা জরুরী। তাই কোভিড নিয়ে সচেতন করা যেমন দরকার তেমনি ওরা আপাতত সুস্থ কিনা তা জানতে প্রেসার, পালস নিয়মিত চেক আপ দরকার। চিকিৎসক না হয়েও যেটুকু জ্ঞান আছে তা দিয়ে এদের প্রাথমিক চিকিৎসা করি মাত্র। অনেক ক্ষেত্রে ওরা উপকৃত হয়। এটাই প্রাপ্তি” মধুবাবুর এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বহু মানুষ।