নিজস্ব সংবাদদাতা: একদিকে ফের লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা, অন্যদিকে নির্বানী আবহ ও গ্রীষ্মের দাবদাহ—এসবের জাঁতাকলেই কার্যত রক্তশূন্য হাওড়া জেলার বিভিন্ন ব্ল্যাডব্যাঙ্কগুলি। রক্তের সঞ্চয় শূন্য অধিকাংশ সরকারি ও হাসপাতালের ব্লাডব্যাঙ্কে। অথচ এই সময়েও প্রচুর রোগীর রক্তের প্রয়োজন।
কিন্তু, বিভিন্ন কারণে সেভাবে রক্তদান শিবির আয়োজিত না হওয়ায় ভয়াবহ রক্তের সংকট দেখা দিয়েছে। আর এতেই চরম বিপাকে পড়েছে বহু মুমূর্ষু রোগী ও থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তের পরিবার। জানা গেছে, হাওড়া জেলায় দু’টি সরকারি ও দু’টি বেসরকারি ব্ল্যাডব্যাঙ্ক রয়েছে।
সরকারি দু’টি হল হাওড়া জেলা হাসপাতাল ও উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের ব্ল্যাডব্যাঙ্ক। বিভিন্ন কারণে সাম্প্রতিক সময়ে রক্তদান শিবির সংগঠিত না হওয়ায় কার্যত রক্তশূন্য এই দুই ব্ল্যাডব্যাঙ্ক। দীর্ঘদিন ধরে হাওড়া জেলায় রক্ত নিয়ে কাজ করছেন পাঁচলার রেজাউল করিম।
তাঁর কথায়, “এমন ভয়াবহ রক্ত সংকট খুব কম দেখেছি। কীভাবে যে মুমূর্ষু রোগীগুলোর পাশে দাঁড়াব ভেবে উঠতে পারছিনা। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে লাইভ ডোনার খুঁজে তাদের ব্ল্যাডব্যাঙ্কে নিয়ে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি।” তিনি বলেন, “গ্রামীণ হাওড়ায় সাধারণত মাসে ১২-১৫ টি কিমবা তারও বেশি রক্তদান শিবির হয়। কিন্তু নির্বাচন ও এই করোনা পরিস্থিতিতে সেই সংখ্যাটা তিন-চারে নেমে এসছে। আর তাতেই সমস্যায় পড়েছেন বহু রোগীর পরিবার।”
তিনি বলেন, আগে এক-একটা রক্তদান শিবিরে ৭০-৮০ কিমবা একশো মানুষ রক্তদান করতেন। কিন্তু, বছর খানেক ধরে দেখা যাচ্ছে সেই সংখ্যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিরিশ কিমবা পঁয়ত্রিশে আবদ্ধ রয়ে যাচ্ছে। তাঁর দাবি, এই সংকট মেটাতে এগিয়ে আসুক বিভিন্ন ক্লাব, প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি।
অন্তত ১৫-২০ জনকে নিয়ে হলেও আপদকালীন তৎপরতায় রক্তদান শিবিরের আয়োজন করুক সংগঠনগুলি। আমতার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্বপ্ন দেখার উজান গাঙ’-এর এক কর্তা জানান, এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মুমূর্ষু রোগীদের পাশে দাঁড়াতে আগামী রবিবার আমাদের সংগঠনের তরফে একটি রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।
পাশাপাশি, তাঁদের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো লাইভ ডোনারও ব্ল্যাডব্যাঙ্কে পাঠানো হচ্ছে বলে তিনি জানান।