নিজস্ব প্রতিবেদক : বাম রাজনীতি মানেই শিক্ষা ও সুস্থ সংস্কৃতির এক অদ্ভুত মেলবন্ধন। এমনটাই মনে করেন বহু মানুষ। আর তারই প্রতিফলন ঘটল বামফ্রন্টের প্রার্থী তালিকায়। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বুধবার সন্ধ্যায় হাওড়া সহ একাধিক জেলার বিভিন্ন বিধানসভায় নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।
জানা গেছে, গ্রামীণ হাওড়ার উলুবেড়িয়া দক্ষিণ ও বাগনান কেন্দ্রে বামেরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। গ্রামীণ হাওড়ার বাকি বিধানসভাগুলিতে সংযুক্ত মোর্চার তরফে কংগ্রেস ও আইএসএফকে ছাড়া হয়েছে। উলুবেড়িয়া দক্ষিণে বামেদের হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন ফরওয়ার্ড ব্লকের হাওড়া জেলার অন্যতম মুখ কুতুবউদ্দিন আহমেদ। জানা গেছে, কুতুব বাবু উলুবেড়িয়া হাইমাদ্রাসার প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক।
১৯৬৮ সালে উলুবেড়িয়া কলেজে পড়াকালীন বামপন্থী ভাবধারা ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে নামেন। পরবর্তীতে ফরওয়ার্ড ব্লকে যোগ দেন ইতিহাসে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত এই অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক। ২০১০ সালে চাকরিজীবন থেকে অবসরের পর ২০১১ সালে উলুবেড়িয়া দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রে ফরওয়ার্ড ব্লকের হয়ে দাঁড়ান। সেবার পরিবর্তনের আবহে অল্পভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের পুলক রায়ের কাছে হেরে যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ। তবে এবার তিনি জয়ের ব্যাপারে বেশ প্রত্যয়ী। আর তাই নাম ঘোষণার সাথে সাথেই লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছেন সত্তোরোর্ধ্ব এই প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক।
তাঁর কথায়, “আমরা শিক্ষার পৃষ্ঠপোষক। কিন্তু, আমাদের বিধানসভা উলুবেড়িয়া দক্ষিণে কোনো কলেজ নেই।” নির্বাচনে জিতে কলেজ তৈরি করতে চান বলে জানান কুতুব বাবু। উলুবেড়িয়া দক্ষিণ কেন্দ্রের বোয়ালিয়া ও শ্যামপুরের দেওয়ানতলার মধ্যে দামোদর নদের উপর ব্রীজ গড়ার বিষয়েও উদ্যোগী হবেন বলে তিনি জানান। অন্যদিকে, বাগনান বিধানসভায় সিপিআইএম প্রার্থী করেছে বসির আহমেদকে। আশি সালে শ্যামপুরের বেলপুকুর কলেজ থেকে ছাত্র রাজনীতির হাত ধরে রাজনীতিতে তাঁর হাতেখড়ি। বাগনানের হ্যালান গ্রামের বাসিন্দা বসির বাবু পেশায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। একটা সময়ে তিনি হ্যালান গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপিআইএমের পক্ষ থেকে উপ-প্রধান নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে তিনি হাওড়া জেলা পরিষদেরও সদস্য নির্বাচিত হন।
বর্তমানে তিনি সিপিআইএমের বাগনান এরিয়া কমিটির সম্পাদক।বছর চুয়ান্নর বসির বাবুর কথায়, “বাংলায় গত দ’শবছরে কোনো শিল্প- কর্মসংস্থান হয়নি। আমরা চাই কারখানার চিমনি গুলো থেকে আবারও ধোঁয়া বেরোক। শিক্ষার শেষে যুবকরা চাকরি পাক। শিক্ষা ও কর্মসংস্থানই আমাদের মূল লক্ষ্য।” কুতুব বাবুর মতোই বুধবার সন্ধ্যা থেকে লড়াইয়ের ময়দানে নেমে পড়েছেন বাগনানের বাম প্রার্থী।