নিজস্ব সংবাদদাতা : এযেন মুক্তির স্বাদ। করোনা পারেনি কয়েকশো বছরের ঐতিহ্যকে রুদ্ধ করতে।অন্যান্যবারের মতোই এবারও হাওড়া জেলার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ও প্রাচীন শ্মশান কালীপুজোকে কেন্দ্র করে মেতে উঠেছে গ্রামীণ হাওড়ার আমতা থানার খড়িয়প গ্রাম। এই জাগ্রত কালীপুজোয় প্রতিবছরই আশপাশের বেশ কয়েকটি ব্লক এমনকি পাশ্ববর্তী জেলা থেকেও অসংখ্য মানুষ পুজো দিতে আসেন। নিউনর্মালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বসেছে মেলা, রয়েছে রকমারি স্টল।
মন্ডপের প্রবেশদ্বারে বসানো হয়েছে স্যানিটাইজিং মেশিন। তবে এদিন সিংহভাগ মানুষকেই মুখে মাস্ক দিয়ে ঘুরতে চোখে পড়েছে। জানা গেছে, অন্যান্যবারের মতোই সপ্তাহব্যাপী চলবে মেলা। প্রায় দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে প্লাস্টিক ফুলের পসরা সাজিয়ে কোলকাতা থেকে খড়িয়পের এই মেলায় আসছেন রঞ্জিত ঘোষ। তাঁর কথায়, “মেলা করেই আমাদের পেট চলে। করোনার জেরে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় খুব সমস্যায় পড়েছিলাম। এবার একটু আশার আলো দেখছি।”
পাশ্ববর্তী ব্লক উদয়নারায়ণপুর থেকে আসা দর্শনার্থী সৈকত রায়ের কথায়, “এবারই প্রথম আসা। মন ভরে গেল।” আমতা থেকে এসেছেন অরুণ খাঁ। অরুণের কথায়, “বহু মানুষকেই এদিন মাস্ক পরে দেখলাম। এই সচেতনতাটাই প্রয়োজন।” গ্রামীণ হাওড়ার অন্যতম বৃহৎ ও জাগ্রত এই কালীপুজো উপলক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর পুলিশ ও সিভিক ভলান্টিয়ার। লাগানো হয়েছে সিসিটিভি।
জানা গেছে, খড়িয়পের বসু পরিবারের জমিদার কাশীনাথ বসু স্বপ্নাদেশ পেয়ে কয়েকশো বছর আগে পুজোর প্রচলন হয়। তাঁর আমল থেকেই নিষ্ঠার সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই কালীপুজো। প্রসঙ্গত, খড়িয়পের জাগ্রত মা কালীর প্রতিমূর্তি রাজস্থানের অম্বর প্যালেসে রাখা আছে। মুঘল সেনাপতি মানসিংহ আমতা থেকে এই প্রতিমূর্তি নিয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা যায়। তাই ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অন্যতম প্রতীক খড়িয়পের কালীপুজোয় রাত যত বাড়ছে ভক্তের ঢলও তত বেড়ে চলেছে।