নিজস্ব সংবাদদাতা : সতী যখন স্বামী নিন্দা সহ্য করতে না পেরে দেহত্যাগ করেছিলেন তখন দেবাধিদেব শিব নিজের কাঁধে সতীর দেহ নিয়ে তান্ডব নৃত্য করতে শুরু করেন। দেবরাজ ইন্দ্র সহ বিভিন্ন দেবতার শরনাপন্ন হয়েছিলেন দেবাধিদেব। সতীর দেহ ৫১ জায়গায় পতিত হয়ে ৫১ পীঠের সৃষ্টি হয়েছিল। এই কাহিনী আমরা কমবেশি প্রত্যেকেই জানি। এই ৫১ স তী পীঠের মধ্যে অন্যতম আসামের কামরূপ কামাখ্যা।
কামাখ্যার আদলেই প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় চতুর্থীতে কুমারী পুজো অনুষ্ঠিত হয় উলুবেড়িয়ার সমরুক গ্রামের ত্রিনয়নী ত্রিশক্তি যোগমায়া আশ্রমে। তবে এখানে একজন নয়, ৫১ জন বালিকাকে প্রতিবছর কুমারী রূপে পুজো করা হয়। যোগমায়া আশ্রমের পুজো এবার আঠারো বছরে পদার্পণ করল।
আশ্রম সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরই নিয়ম মেনে চতুর্থী তিথিতে এলাকার ৫১ জন কুমারীকে ৫১ পীঠের দেবীরূপে পুজো করা হয়। প্রতিপদ থেকে শুরু হয় নবদুর্গার আরাধনা। থাকে হোম-যোজ্ঞ, নাম-সংকীর্তণ।যোগমায়া আশ্রমে মা দুর্গাকে বছরভর পুজো করা হয়। প্রতি বছর পুজোর সময় আগের বারের মূর্তি বিসর্জন করা হয়। আবার এবছরের প্রতিমাকে পরবর্তী বছরে পুজো অব্ধি নিত্যপুজো করা হয়।
আশ্রম কমিটির সম্পাদক লালবাবা মহারাজ বলেন, “আমি কামাখ্যায় গেলেও সব সতীপীঠে যেতে পারিনি। আমি মা’য়ের স্বপ্নাদেশ পাই। আর সেই স্বপ্নাদেশ পেয়েই আশ্রমে ৫১ জন কুমারীকে ৫১ পীঠের দেবীরূপে প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সময় চতুর্থীতে পুজো করি।”
লালবাবা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারও হরিনাম-সংকীর্তণ, নরনারায়ণ সেবা, বাদ্যযন্ত্র সহকারে গ্রামপ্রদক্ষিণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এবার সমস্ত ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব যেমন মানা হচ্ছে তেমনই করোনা সম্পর্কিত প্রশাসনের সমস্ত বিধিনিষেধ মেনেই আশ্রমে এবারের পুজো আয়োজন করা হয়েছে।” চতুর্থীতে কুমারী পুজো উপলক্ষ্যে আশ্রম চত্বর থেকে গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে প্রায় আড়াই হাজার মাস্ক বিতরণ করা হয়েছে বলে লালবাবা জানান।