নিজস্ব সংবাদদাতা : আজ বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার কান্ড হাওড়ায়। সদর হাওড়ার পাশাপাশি বৃহস্পতিবার গ্রামীণ হাওড়ার ৬ নং জাতীয় সড়কেও ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সকালের দিকে পুলিশ নবান্নমুখী বহু গাড়িকে যেতে বাধা দেয় বলে অভিযোগ।
তারপরই জাতীয় সড়কের উপর অবরোধে বসে পড়েন বিজেপির কর্মী-সমর্থকরা। পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। গেরুয়া শিবিরের এই কর্মসূচি উপলক্ষে ৬ নং জাতীয় সড়ক ধরে হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলার বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা নবান্ন অভিমুখে যাওয়ার জন্য আসেন।
নবান্নমুখী বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের আটকাতে প্রথম থেকেই তৎপর ছিল হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের বিশাল পুলিশ বাহিনী। এদিন সকাল থেকেই গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর পরিমাণ পুলিশ, র্যাফ, কমব্যাট ফোর্স মোতায়েন করা হয়।
সকাল থেকেই আমতা সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রাথমিকভাবে গাড়ি আটকায় পুলিশ। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ধূলাগড় টোল প্লাজার কাছ থেকে নবান্নমুখী গাড়িগুলোকে কোলাঘাটমুখী লেনে পুলিশ ঘুরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এইভাবে বেশ কিছুক্ষণ কাটার পর ধুলাগড়ে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সংখ্যা ক্রমশ বাড়তে থাকে। তখন তারা পুলিশের কাছে নবান্নের দিকে যেতে দেওয়ার দাবি জানান।
এর পাশাপাশি, টোলপ্লাজা পার হয়ে অনেক বিজেপি কর্মী-সমর্থক মুম্বই রোড অবরোধ করে। পুলিশ তাদের সরে যেতে বললেও তারা না সরায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের সরিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। এভাবে দীর্ঘক্ষন অবরুদ্ধ হয়ে থাকে মুম্বাই রোড। পরে ঘটনাস্থলে এসে হাজির হন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।
তিনি জেলা পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং শেষে পতাকা, ফেস্টুন গাড়িতে না লাগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশ। পরে ফের পৌনে ১ টা নাগাদ পুলিশ গাড়ি আটকে দেয় বলে অভিযোগ। আবার বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের যাওয়ার অনুমতি দেয় পুলিশ।
বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ,মানুষ যাতে নবান্ন অভিযানে সামিল না হয় তার জন্য পুলিশ ভয় দেখিয়ে মালিক ও ড্রাইভারদের গাড়ি চালাতে বারণ করেছে।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক প্রত্যুষ মন্ডল বলেন, “বিজেপির ডাকে মুখ্যমন্ত্রীও সাড়া দিয়েছেন। তাই দু’দিন নবান্ন বন্ধ করে পালিয়েছেন। আর অতিসক্রিয় পুলিশ বিজেপির এই অভিযান আটকাতে তৎপর।”
তিনি বলেন, “পুলিশ যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এতোটা সক্রিয় হতো তাহলে বাংলার এতো দুর্দশা হতনা। তা না করে বিজেপির পূর্ব নির্ধারিত অভিযান আটকাতে মরিয়া পুলিশ।”
অন্যদিকে, সকাল থেকেই আমতা থানার চন্দ্রপুর আউটপোস্টের কাছে গাড়ি আটকায় পুলিশ। তবে এদিন সকাল থেকেই রাস্তাঘাটে গাড়ির সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। গ্রামীণ হাওড়ার বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন রুটে বাস তো বটেই অটো, ম্যাজিকও খুব কম চলতে দেখা গিয়েছে।
এদিন অভিযানের শেষে বিকালে উলুবেড়িয়ার মনসাতলায় বিজেপির জেলা কার্যালয়ে আসেন রাজ্য বিজেপির নেতা সায়ন্তন বসু। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “দীর্ঘদিন রাজনীতি করছি। পুলিশের লাঠি, কাঁদানে গ্যাস দেখেছি। কিন্তু, এরকম রঙিন জল দিয়ে বিজেপি-কর্মী সমর্থকদের অসুস্থ করতে দেখিনি।” তিনি আরও বলেন, “আজ তো ঘোষণা করে নবান্ন অভিযান হয়েছে। এবার ঘোষণা না করে হঠাৎ নবান্ন অভিযান হবে।”