জনশ্রুতিতে শোনা যায় যে, জব চার্নক গঙ্গাবক্ষে নৌকা নিয়ে কলকাতা অভিমুখে যাওয়ার আগে নাকি উলুবেড়িয়ায় বেশ কয়েকদিন ছিলেন। জায়গাটি তার বেশ পছন্দও হয়েছিল। কিন্তু বাধ সেধেছিল হোগলার বোন ও মশার উত্পাত। অগত্যা তিনি কলকাতা অভিমুখে রওনা দেন। কিন্তু ভাবুন যদি ওই বাধা দুটি না থাকত তাহলে হয়ত উলুবেড়িয়ার ইতিহাস অন্য খাতে বইত। হয়ত বা উলুবেড়িয়া হয়ে উঠত বাংলার রাজধানী বা তত্কালীন ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষের রাজধানী। জনশ্রুতির কথা বাদ দিলেও উলুবেড়িয়ার ইতিহাস যথেষ্ট প্রাচীন। উলুবেড়িয়ার বিখ্যাত কালীবাড়ি যাওয়ার পথে গঙ্গার যে ছোট খালটি দেখতে পাওয়া যাই, ব্রিটিশ শাসিত বাংলায় ওই খালটিই ছিল কলকাতা যাওয়া আসার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পথ। এর উল্লেখ বাংলার প্রথম গদ্য সাহিত্য পেরিচাঁদ মিত্রর “আলালের ঘরে দুলাল “- এ পাওয়া যায়। স্বাধীনতার সংগ্রাম যখন চরম মুহূর্তে তখন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোসের উলুবেড়িয়া গরুহাটা মোড়ের বিশাল জনসভার অভিজ্ঞাতা এখনও বয়স্কদের মুখে মুখে ঘোরে।
এ তো গেল ইতিহাসের কথা। ভৌগোলিক দিক থেকেও গঙ্গার তীরে অবস্থিত হাওড়া জেলার এই মহকুমা শহরটি গুরুত্ব অনস্বীকার্য। প্রাচীন এই শহরটি বর্তমানে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ব্যবসা, বাণিজ্য, এবং রাজনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এছাড়াও গঙ্গাবক্ষে অবস্থিত সুপ্রাচীন কালীবাড়ির বিখ্যাত রাসমেলা ও কালীপূজা উপলক্ষে হাওড়া জেলার বিভিন্ন স্থান ছাড়াও গঙ্গার ওপার থেকেও হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে। উলুবেড়িয়া এক মহামিলনের ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। কিন্তু শুধু ইতিহাস নয়, উলুবেড়িয়ার বর্তমান ও সমসাময়িক রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বিভিন্ন বিষয়ে খুঁটিনাটি তথ্য ও সংবাদ উলুবেড়িয়ার প্রত্যেকটি মানুষের কাছে যাতে পৌঁছে যায় তার জন্যই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।