নিজস্ব সংবাদদাতা : আম্ফানের জেরে একদিকে যেমন ভেঙে পড়েছে অজস্র গাছ, কাঁচাবাড়ি অন্যদিকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রাম বাংলার চাষের। সেই ছবিই ধরা পড়ল গ্রামীণ হাওড়ার ‘শস্যভান্ডার’ উদয়নারায়ণপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে।
আম্ফানের অভাবনীয় আস্ফালনের ফলে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন উদয়নারায়ণপুর ব্লকের ৭৫ টি মৌজার ১১২ টি গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক। জানা গেছে, এই ব্লকে প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষ হয়। আমফানের ধ্বংসলীলায় নষ্ট হয়ে গিয়েছে সমস্ত চাষ।
চাষীদের কথায়, বেশ কিছু জমিতে ধান তোলা বাকি ছিল,সেগুলো সবই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আলু চাষের পর ঐ সমস্ত জমিতে তিল ও চীনা বাদামের চাষ করেছিলেন কয়েক হাজার চাষী প্রবল ঝড় জলের কারনে জমিতে জল জমে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সমস্ত চাষ।
পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে কয়েকশো একর জমির লঙ্কা, ঝিঙে, লাউ সহ বিভিন্ন ধরনের সব্জি চাষ। উদয়নারায়নপুরে গড়ভবানীপুর এলাকার এক চাষী কার্তিক পাঁজা জানিয়েছেন দেড় বিঘা জমিতে তিল, বাদাম, চিচিংএ, লঙ্কা, কড়াই চাষ করেছিলেন, তার পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে।
তিনি বলেন যে পরিমাণ সব্জি নষ্ট হয়েছে তার বাজার মুল্য প্রায় পঞ্চাশ হাজার টাকা। তিনি বলেন এখন সরকারের দিকে তাকিয়ে বসে আছি। আর্থিক সাহায্য পেলে তবেই আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবো। আর এক চাষী সমর দলুই বলেন বিঘা তিনেক জমিতে তিল, মুগকলাই ও বাদাম চাষ করেছিলাম।
সব চাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। মাঠে এখন এক হাঁটু জল। অনেক আর্থিক ক্ষতি হয়ে গেলো। স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, “উদয়নারায়নপুরে কমবেশি প্রায় সাড়ে সাত হাজার হেক্টর জমির চাষ সম্পূর্ণ ভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। বিশেষ করে এই সময় আলু উঠে যাওয়ার পর চাষীরা বাদাম, তিল ও কাঁচা সবজি চাষ করে।সেগুলো ১০০ শতাংশ নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
এগ্রিকালচার বিভাগের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।” তিনি আরো জানান, “যদিও রাজ্য এই সময় চরম আর্থিক সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তবুও মুখ্যমন্ত্রী সব সময় চাষীদের পাশে দাঁড়ান। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার কাজ চলছে। আমরা আশাবাদী মুখ্যমন্ত্রী এর আগেও যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, এবারেও একই ভাবে তিনি চাষীদের পাশে দাঁড়াবেন।”