নিজস্ব সংবাদদাতা : করোনার করাল গ্রাস থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে দেশজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে লকডাউন। লকডাউনের জেরে কার্যত কর্মহীন হয়েছেন বহু মানুষ। দু’বেলা দু-মুঠো অন্ন সংস্থান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বহু পরিবারকে। ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও বিভিন্ন পাড়ার ক্লাব। এইসমস্ত সংগঠনের মতোই করোনার বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে সদর হাওড়ার ‘Ambika Banerjee Cancer Foundation’। চাল, ডাল, আলু বা তেল নয়, তাঁরা মুমূর্ষু রোগীদের দিচ্ছেন ‘কেমো’। আর এভাবেই এই সংকটময় মুহূর্তে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে নন্দিতা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। উল্লেখ্য, নন্দিতা দেবী হাওড়ার প্রাক্তন সাংসদ অম্বিকা ব্যানার্জীর কন্যা। গত ২০১৩ সালে অম্বিকা ব্যানার্জী ক্যান্সারে মারা যান। তারপরই তাঁর দু’ই কন্যা ও স্ত্রী’র ভাবনায় ক্যান্সার রোগীদের স্বার্থে এই বিশেষ সংগঠন গড়ে ওঠে। নন্দিতা দেবীর কথায়, “বাবার মতো মা’ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। জীবনে বাবার ইচ্ছে ছিল ক্যান্সার রোগীদের স্বার্থে কাজ করার। কিন্তু, ক্যান্সার রোগীদের জন্য সেভাবে তিনি কিছু করে উঠতে পারেননি। তাঁর অসম্পূর্ণ ইচ্ছেকে বাস্তবায়িত করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। মা চলে যাওয়ার পর সেই কাজে আমি আর আমার দিদি আরও দৃঢ়ভাবে ব্রতী হয়েছি। সেই ভাবনা থেকেই লকডাউনের সময়ে ক্যান্সার আক্রান্ত মুমুর্ষুদের পাশে দাঁড়ানোর এই প্রয়াস।” একইসঙ্গে অম্বিকা – কন্যা জানান, “লকডাউনে আমরা কেউ বাড়ি থেকে বেরোচ্ছি না। যেসকল রোগী পরিবার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সেই খবর আমাদের কাছে আসছে। যাঁদের কেমোথেরাপির জরুরি প্রয়োজন তাঁদের আমাদের পরিচিতি হাসপাতাল রয়েছে যারা কেমোথেরাপির কাজ লকডাউনেও বন্ধ রাখেনি। টেস্টের প্রয়োজন সেটাও অনেকেই করছে। আমরা তাঁদেরকে সেখানে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।” স্বপন পাল, দীপা কর্মকার, তাপসী রায়, বিভাস মাইতিদের মতো ক্যান্সার রোগীরা যেমন নন্দিতা দেবীর সংস্থার সৌজন্যে ‘কেমো’ পেয়েছেন তেমনই অনেক ক্যান্সার আক্রান্তের আবার সংসার চালাবার মতো সামর্থ্যও নেই, তাঁদের সংসারের খরচ নিজেই বহন করছেন অম্বিকা – কন্যা। করোনার বাধা আটকাতে পারেনি নন্দিতাদেবী ও তাঁর সংগঠনের লড়াইকে। বহু দূর – দূরান্ত থেকে মানুষ যাঁরা ওষুধ কিনতে পারছেন না সেই ওষুধের প্রেসক্রিপশনও আসছে হোয়াটসঅ্যাপে। ওষুধ কিনে সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন তিনি। সবাই যখন চাল – ডাল বিতরণ করছে, নন্দিতা দেবী তখন ক্যান্সার রোগীদের স্বার্থে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
চাল, ডাল নয়, ‘কেমো’র ব্যবস্থা করে করোনার বিরুদ্ধে লড়ছেন অম্বিকা-কন্যা
Published on: