নিজস্ব সংবাদদাতা : ৩রা মে বিয়ের দিন ঠিক হয়েছিল অনেক আগে থেকেই। দু’মাস আগে রেজিস্ট্রি ম্যারেজও হয়ে গিয়েছিল।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াতে লক ডাউনের বিধি নিষেধ মেনে রীতি নীতি মেনে মন্দিরে বিয়ে করে, বিয়ের খরচের টাকায় দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং কিছু টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নব বিবাহিত দম্পতি।
উদয়নারায়নপুরের প্রতাপচকের বাসিন্দা পেশায় বেসরকারি সংস্থার কর্মী দীপায়ন সামন্ত ও গজা এলাকার বাসিন্দা পেশায় শ্যামপুরের অনন্তপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা পিয়ালী মাইতির বিয়ের দিন ধার্য হয়েছিল ৩ রা মে। দু’মাস আগে হয়েছিল রেজিস্ট্রি ম্যারেজও।
দুই পরিবারের মধ্যেই চলছিল অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি। নিমন্ত্রণ সারাও প্রায় শেষের পথে। কিন্তু ১৪ই এপ্রিল লক ডাউনের সময় সীমা বাড়ার পরেই দুই পরিবারের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, বিয়ে হবে মন্দিরে। সেই মতো কনের সাজে সজ্জিত হয়ে নিজেই স্কুটি চালিয়ে স্থানীয় মা গজাই চন্ডীতলা মন্দিরে পৌঁছে যায় পিয়ালী।
বন্ধুর বাইকে চেপে বর সেজে সেখানে হাজির হয় দীপায়ন। হাজির ছিলেন পিয়ালীর বাবা ও দীপায়নের কাকা ও দুই বন্ধু। পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের মাধ্যমে শাস্ত্র মতে বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হওয়ার পরেই, নিজের স্কুটির পিছনে বরকে বসিয়ে শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয় পিয়ালী।
দীপায়ন জানায় ১২ই জানুয়ারি আমাদের রেজিস্ট্রি ম্যারেজ হয়েছিল। ৩ রা মে বিয়ের অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লক ডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি হওয়ার ফলে আমরা সিদ্ধান্ত নিই, মন্দিরে বিয়ে করবো এবং বিয়ের অনুষ্ঠানের টাকা দিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবো এবং কিছু টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে তুলে দেবো।
দীপায়নের বাবা লক্ষীকান্ত সামন্ত বলেন প্রথমে ভেবেছিলাম ছেলের বিয়েতে সকলে মিলে মজা করবো। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে ছেলে ও বৌমা মিলে সিদ্ধান্ত নেয় যে, মন্দিরে বিয়ে করবে। এবং সেই টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলে তুলে দেবে। আমি সাথে সাথেই রাজি হয়ে যাই। আমি গর্বিত ছেলে ও বৌমার এই সিদ্ধান্তে।
পিয়ালী জানায় এই পরিস্থিতিতে আনন্দ করার চেয়ে দুঃস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোটাই শ্রেয় বলে মনে করেছি। তাই এই সিদ্ধান্ত। এর ফলে যদি কিছু মানুষের উপকার করতে পারি, তার থেকে বেশী আনন্দের আর কিছু হয়না। দীপায়ন ও পিয়ালির এই উদ্যোগে খুশি এলাকার মানুষ।