নিজস্ব সংবাদদাতা : এবাৎ, ইসরাফিল, সাকিম – ওদের কেউ রিক্সা চালান, কেউবা কাজ করেন করেন কলকারখানায় আবার বা ফেরিওয়ালার কাজ করে নুন আনতে পান্তা ফুরানোর সংসারে কোনোভাবে অন্ন সংস্থান করেন। করোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে ২১ দিনের ‘লকডাউন’ কার্যত মাথায় বজ্রপাত ফেলেছে উলুবেড়িয়ার ফতেপুরের ব্যাঙ্কপাড়ার দিন আনা দিন খাওয়া এই পরিবারগুলিতে।
প্রাত্যহিক রোজগার হঠাৎই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ভাঁজ – কীভাবে পরিবারের অন্ন সংস্থান হবে! এই ভাবনায় যখন রাতের ঘুম উড়েছে, ঠিক তখনই এই প্রান্তিক পরিবারগুলির পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন উলুবেড়িয়ার কালীনগর নিউ সেট আপ জুনিয়র গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা খান ও তাঁর পরিবারের সদস্য-সদস্যরা।
প্রধানমন্ত্রী ‘লকডাউন’ ঘোষণা করার দিনই সাবিনা তাঁর পারিবারিক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তাঁর গ্রামের প্রান্তিক মানুষকে এই পরিস্থিতিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেন। বাড়ির অন্যান্যরাও তাঁর সাথে সহমত পোষণ করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।তারপরই অঙ্কের এই শিক্ষিকা স্থানীয় দোকান থেকে মুদিখানার বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে প্যাকিং করার ব্যবস্থা করেন।
আজ পরিবারের সদস্য-সদস্যারা ওই সমস্ত প্রান্তিক মানুষের দ্বারে গিয়ে তুলে দেন চাল, ডাল, তেল, হলুদ, চিনি, নুন, চা সহ বিভিন্ন সামগ্রী। সাবিনা খান জানান, “খুব কষ্টে আমরা মানুষ হয়েছি। বাবা-মা’র আশীর্বাদে আজ আমরা প্রায় প্রত্যেকেই দেশ-বিদেশে সুপ্রতিষ্ঠিত। তাই আজকের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর কষ্ট সত্যিই অনুভব করি।
তাই আমাদের এই সমবেত পারিবারিক প্রচেষ্টা। “আজ প্রায় ৪০ টি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় এই সমস্ত সামগ্রী। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আরও প্রায় ৩০ টি পরিবারের হাতে তাঁদের পক্ষ থেকে এই সমস্ত সামগ্রী তুলে দেওয়া হবে বলে জানান উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা এই শিক্ষিকা। জিন্নাতুন বিবি, রহমত খানরা চান সাবিনাদের মতো সমাজসচেতন মানুষের হাত ধরেই বিপর্যয়ে ঘুরে দাঁড়াক তাঁদের মতো অসহায় পরিবারগুলি।