নিজস্ব সংবাদদাতা : সরকার নির্ধারিত বেতন, সমস্ত ঠিকা শ্রমিকদের ইএসআই, প্রভিডেন্ট ফান্ড দেওয়া সহ একাধিক দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল চেঙ্গাইলের প্রেমচাঁদ চটকলের তাঁতঘর বিভাগের কয়েকশো শ্রমিক। মঙ্গলবার দুপুর থেকে তারা এই অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছে। বুধবারও সারাদিন ধরে চলে এই কর্মসূচি। তার জেরে ব্যাহত হয় চটকলের উৎপাদন। প্রেমচাঁদ জুটমিল ঠিকা শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠনের সদস্যরা এই আন্দোলন সামিল হয়েছে। এব্যাপারে কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শ্রমিক সংগঠনগুলো মধ্যে তৃণমূল, কংগ্রেস ও ফরোয়ার্ড ব্লক সমর্থিত সংগঠন গুলি শ্রমিকদের দাবির সঙ্গে সহমত হলেও কৌশলগত প্রেক্ষিতে এই আন্দোলনকে সমর্থন করছে না বলে জানিয়েছেন। তবে সিটুর বক্তব্য তারা এই আন্দোলন সম্পর্কে তাদের বিশেষ কিছু জানা নেই। তাই তারা এই আন্দোলনকে সমর্থন করছে না বলে সংগঠনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। জানা গিয়েছে এই কারখানায় প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিকের মধ্যে প্রায় দেড় হাজার ঠিকা শ্রমিক রয়েছে। ঠিকা শ্রমিকদের বক্তব্য তারা সরকার নির্ধারিত বেতন পাচ্ছেন না। এছাড়া ইএসআই, প্রভিডেন্ট ফান্ড সহ বহু ভাতা তারা পাননা। তারা জানিয়েছেন সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাদের কমপক্ষে ৩০০ টাকা পাওয়ার কথা থাকলেও তারা কেউ পান ২০০টাকা তো কেউ পান ২৫০ টাকা।
সর্বোচ্চ তারা ৩৪৮ টাকা পান। এছাড়াও নাইট অ্যালাউন্স, ঘর ভাড়া, লাইন ছুটি কিছুই তারা পাচ্ছেন না। কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দরবার করেও কোনো সুরাহা হয় নি বলেও তারা জানান। এমনকি অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলোও সেভাবে সচেষ্ট নয় শ্রমিকদের পাশে থাকার ক্ষেত্রে। একাধিক শ্রমিক জানিয়েছেন তারা কেউ ২ বছর কেউ ৫ বছর কাজ করলেও বিশেষ কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে হাওড়ার শ্রম দফতরের কর্তা রজত কুমার পাল বলেন, নিয়ম অনুযায়ী নূন্যতম মজুরি ৩০০ বেশি টাকা দিতে হয়। যদি শ্রমিকদের তা না দেওয়া হয় সেটা বেনিয়ম। শ্রমিকরা তিনশো টাকার কম মজুরি পান এমন অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। মিলের তরফে কেউ মুখ খুলতে চাননি।
মিলের আইএনটিটিইউসির তরফে জানানো হয়েছে আমরা সবসময়ই শ্রমিকদের পাশে রয়েছি। ওদের দাবি সমর্থন করি। তবে আগামী মাস খানেকের মধ্যেই আবার শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে মালিকের সঙ্গে বসার কথা। তাই আর কয়েক দিন অপেক্ষা করা ওদের উচিত ছিল। তার আগে অপেক্ষা না করে কাজ ব্যাহত করে কোনো আন্দোলন আমরা সমর্থন করছি না। একই বক্তব্য জানিয়েছেন আইএনটিইউসি নবকুমার প্রামাণিক ও টিইউসিসির হাবিবুর রহমান। সিটুর তরফে নারায়ণ শ্যামল বলেন, আমরা ওদের দাবির বিষয়ে কিছু জানি না। আমাদের সঙ্গে ওরা আলোচনা ও করেনি। ফলে ওদের আন্দোলন সমর্থন করছি না।