নিজস্ব সংবাদদাতা : ৫ মাসের ঘুমন্ত শিশুকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুনের অভিযোগ উঠলো দূস্কৃতিদের বিরুদ্ধে। আমতা থানার বসন্তপুর এলাকার ঘটনা। ঘটনার পরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে এলাকার লোকজন। আমতা হাওড়া রোডের উপর গাছের উপর গুঁড়ি ফেলে অবরোধ শুরু করে। মৃত শিশুর দেহ কোলে নিয়ে রাস্তার উপর বসে পড়ে মৃত শিশুর মা। বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ।
তারা শিশুটির দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠানোর পাশাপাশি লাঠিচার্জ করে অবরোধ তুলে দেয়। ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ একজনকে আটক করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার ভোরে আমতা থানা এলাকার বসন্তপুর মহিষপুর এলাকায়। জানা গেছে এই এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় মালিক ও দোলন মালিকের সাথে বিছানায় ঘুমিয়ে ছিল তাদের ৫ মাসের শিশুপুত্র মুক্ত মালিক ও প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী তাদের ৬ বছরের কন্যা।
রাতের বেলে ঘুম ভাঙলে তারা দেখেন বিছানায় নেই তাদের ৫ মাসের সন্তান। তারপরেই তারা দেখেন বিছানার মাথার দিকে ইঁট সাজিয়ে বন্ধ রাখা জানালাটি হাঁ হয়ে রয়েছে। তাদের চিৎকারে ছুটে আসেন এলাকার লোকজন। সকলে মিলে খোঁজাখুঁজি করে। সকাল ৬ টা নাগাদ স্থানীয় মহিলা পূর্নিমা রায়, বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরের একটি খালে শিশুটির দেহ ভাসতে দেখে। এরপরেই শুরু হয় রাস্তা অবরোধ।
কয়েক ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায় হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিষ মৌর্য ও উলুবেড়িয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পার্থ ঘোষের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ। অভিযোগ পুলিশ অবরোধকারীদের উপর লাঠিচার্জ করে অবরোধ তুলে দেয়। পুলিশ খালের পাড় থেকে উদ্ধার করে একটি ব্যাগ। সেই ব্যাগ থেকে পাওয়া গেছে মুর্শিদাবাদ থেকে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে আসা এক ব্যক্তির ভোটার কার্ড, রাজমিস্ত্রির কয়েকটি ও যন্ত্রপাতি ও একটি করে টুপি ও লুঙ্গি।
এই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশ এই ব্যক্তিকে আটক করেছে। মৃত শিশুর বাবা সঞ্জয় মালিক বলেন বালির লরির খালাসির কাজ করি। রাত দুটোর সময় ঘুম ভাঙতে দেখি ছেলে পাশে ঘুমাচ্ছে। রাত ৩টের সময় বালির লরির চালক কাজে যাওয়ার জন্য ফোন করে। সেই ফোন আসতেই ঘুম ভেঙে যায়।
তখনই দেখি ছেলে নেই।তারপর থেকেই হন্যে হয়ে চারিদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। তারপর সকাল ছটার সময় ফোন মারফত জানতে পারি আমার ছেলের দেহ পাওয়া গেছে। তার অভিযোগ কেউ বা কারা ঘুমের ওষুধ স্প্রে করে, জানালায় সাজিয়ে রাখা ইঁট সরিয়ে তার ছেলেকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল। তারা রাস্তা অবরোধ করলে, পুলিশ তাদের উপরেই বেধড়ক লাঠিচার্জ করে বলেও তার অভিযোগ।
অন্যদিকে আটক হওয়া ব্যক্তির দাবি, রাতে তার ঘর থেকেও কেউ বা কারা তার ব্যাগটি চুরি করে নিয়ে গেছে। তিনি কখনই এই ঘটনায় যুক্ত নন। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশিষ মৌর্য বলেন এলাকার লোকজন একজন ব্যক্তিকে সন্দেহ করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। তাকে আটক করে জিঞ্জাসাবাদ করা হচ্ছে। অবরোধের উপর লাঠিচার্জের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন আটক করা ব্যক্তিকে বাড়িতে আটকে রেখে উন্মুক্ত জনতা ভাঙচুর করতে গিয়েছিল। সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করেন।