নিজস্ব সংবাদদাতা : আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী উচ্ছেদ চলার সময় গৃহহীন হওয়ার আতঙ্কে নিজের শরীরে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা এক মহিলার।সাবিরা বেগম (৪০) নামের এই মহিলা কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন। জানা গেছে উলুবেড়িয়ার রাজাপুর থানা এলাকার বড়গ্রামে উলুবেড়িয়া আমতা রাস্তার পাশে সরকারি জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ধরেই পরিবার সহ বসবাস করছিল সাবিরা। বছর পাঁচেক আগে সেখ নজরুল নামে এক ব্যক্তি সাবিরার বাড়ির পিছনের জায়গাটি কিনে নেয়। রাস্তা নিয়ে সমস্যার কারণে নজরুল সাবিনা বেগমকে রাস্তার জায়গা দিতে বললেও, কর্নপাত করেনি সাবিরা ও তার পরিবারের লোকজন।
পরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। কয়েকদিন আগেই আদালত পূর্ত ও সড়ক বিভাগকে জায়গাটি খালি করার নির্দেশ দেন। প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে একাধিক বার জায়গা খালি করার নির্দেশ উপেক্ষা করেছিল সাবিরা ও তার পরিবারের লোকজন। ১৫ দিন আগে এই বিষয়ে একটি নোটিশ পাঠানো হলেও, সেটি পরিবারের কেউ গ্রহণ করতে রাজি না হওয়ায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়ির দেওয়ালে নোটিশ টাঙিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার দুপুরে আদালতের নির্দেশ মতো উলুবেড়িয়া ২ নং ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক, পূর্ত ও সড়ক দফতরের আধিকারিক গন পুলিশ নিয়ে সাবিরার বাড়ির যান এবং তাকে জায়গা খালি করে দিতে বলেন।
অভিযোগ সেই সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। সেই সময় সাবিরা হটাৎ করেই ঘরের ভিতর ঢুকে নিজের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়। তার চিৎকারে বাইরে থাকা পুলিশ কর্মীরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে কলকাতার একটি সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তিনি বর্তমানে সেখানেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরপরেই ক্ষীপ্র হয়ে ওঠে এলাকার লোকজন। পুলিশকে ঘিরে চলে ধাক্কা ধাক্কি।
পরে হাওড়া গ্রামীণ জেলার পুলিশ সুপার সৌম্য রায়ের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকগন সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ। তারা জমায়েত সরিয়ে দেন। সাবিরা বেগমের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ সাবেরা বেগম ও সেখ সাইফুদ্দিন তাদের সাত ছেলে মেয়েদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই এখানে বসবাস করছিল। বুধবার প্রশাসনের পক্ষ থেকে উচ্ছেদ করতে এলে, তারা এক সপ্তাহ সময় চান। এরপরেই পুলিশ কর্মীরা জোরকরে উচ্ছেদ করতে গেলে আতঙ্কে সাবিরা নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। হাওড়া গ্রামীণ জেলার পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী প্রশাসনের লোকজন মহিলার বাড়িতে গিয়েছিল। ঘড় ছাড়া হওয়ার আতঙ্কে মহিলা নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে দেন। পুলিশি হেনস্থার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলেও তিনি জানান।