নিজস্ব সংবাদদাতা : “তোমাকে ভালবেসে তোমার পথেই হারিয়ে যাওয়া এক পথিক” — বছরখানেক আগেই নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে অভিমানী পাহাড়কে উদ্দেশ্য করে লাইনগুলি লিখেছিলেন তরুণ চিকিৎসক সাগর দে। বছর ঘুরে অদ্ভুত সমাপতন। সে-ই পথেই চিরতরে হারিয়ে গেলেন বাগনানের সাগর দে, চন্দ্রশেখর দাস ও সরিৎশেখর দাস। বৃহস্পতিবার সকালে কোলকাতা বিমানবন্দরে তিনজনের কফিনবন্দী দেহ নামানো হয়। সেখান থেকে বাগনানে আনা হয় তিনজনের দেহ। বিস্তারিত জানতে নীচে পড়ুন…
সাগরের মুরালীবাড়ের বাড়িতে সাগরের দেহ, সরিৎ ও চন্দ্রশেখরের বাড়িতে তাদের দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিন অভিযাত্রীর আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব সহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা। চন্দ্রশেখর দাস খালোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য হওয়ায় তার দেহ গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানান পঞ্চায়েত প্রধান সহ অন্যান্যরা। অন্যদিকে, আমতার উদং পোদ্দারপাড়ায় সাগরের পৈতৃক বাড়িতে সাগরের কফিনবন্দী নিথর দেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর বাড়ির লোকজন। সাগর ছিলেন উদং কালীমাতা বালক সংঘের সদস্য। সাগরের মৃতদেহ সেই ক্লাবের মাঠে নিয়ে গিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
তারপর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার উদ্দেশ্যে তিনটি মরদেহ বাউড়িয়া বার্নিং চুল্লিতে নিয়ে আসা হয়। এদিন বাগনানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায়, হাওড়ার জেলাশাসক মুক্তা আর্য, হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ সুপার সৌম্য রায় সহ পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা। এদিন সকাল থেকে বাগনান মুরালীবাড়ে ও আমতার উদংয়ে প্রচুর পরিমাণ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল।
রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। কোনো সমবেদনা জানানোর ভাষা নেই।” তিনি আরও বলেন,”খবর পাওয়ার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিলেন। তাঁর সার্বিক প্রচেষ্টায় উত্তরাখন্ড সরকারের সাথে যোগাযোগ রেখে দেহগুলিকে উদ্ধার করে দ্রুত আনানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সমস্ত রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে।” এদিন সকাল থেকেই তিন তরুণকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হয়েছিলেন বহু মানুষ। চোখের জলে তিন যুবককে বিদায় জানান অজস্র মানুষ।